আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই বাংলাদেশে ভোট হবে। শেখ হাসিনার সরকার সেই আইন বদলে যে নতুন সংশোধনী আইন এনেছিল, তার কিছু অংশ বাতিল করল বাংলাদেশের হাই কোর্ট। শেখ হাসিনার সেই সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে পিটিশন জমা পড়েছিল হাই কোর্টে। তা নিয়েই এই রায় দিয়েছে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
গতকালই, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের শেষ দিকে সেখানে নির্বাচন হতে পারে। এ দিন আদালত এই রায় দেওয়ার ফলে ইউনূসের সুবিধা হলো বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। তাঁর কুর্সি শক্তপোক্ত হলো বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালত জানিয়েছে বাংলাদেশের এখনকার সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়।
২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চালু করে হাসিনার সরকার। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। তার আগে বাংলাদেশে ওই ব্যবস্থা চালু ছিল। ভোটের সময় দেশের ক্ষমতা থাকত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে। সেই ব্যবস্থাই বন্ধ করে সংশোধনী আইন আনে হাসিনার সরকার। সেই আইনে এ-ও বলা হয় যে, অসাংবিধানিক ভাবে ভোট ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। অভিযুক্তকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়।
এই পঞ্চদশ সংশোধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছর ১৮ অগস্ট হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। দাখিল করেছিলেন এক মুক্তিযোদ্ধা। এই আইনের ১৬টি ধারার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। পরে মামলায় যুক্ত হয় বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামি-সহ কয়েকটি সংগঠন। সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে হাসিনা সরকারের সেই সংশোধনী আইনের কিছু অংশ বাতিল করেছে হাই কোর্ট।
এই রায় দেওয়ার সময়ে আদালত জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে হয়েছিল। সেই কারণে এটি সংবিধানের মৌলিক ভিত্তি হয়ে গিয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে আদালত। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ সংক্রান্ত সংশোধনীর দুটি ধারাও বাতিল করেছে আদালত।