ইরানের হিজাব বিষয়ক আইন স্থগিত করেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল। আইনটি শুক্রবার থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আইনটিকে ‘অস্পষ্ট এবং সংস্কারের প্রয়োজন’ বলে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে আইনটি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়, দেশের মহিলাদের কঠোর ভাবে হিজাব-বিধি অনুসরণ করে চলতে হবে। ঢেকে রাখতে হবে মাথার চুল, কাঁধ এবং পা। নিয়মের অন্যথা হলে কড়া শাস্তির সংস্থানও ছিল। অল্প নিয়মভঙ্গে জরিমানা নেওয়া হত। আর সর্বোচ্চ সাজা ছিল ১৫ বছরের কারাবাস। দেশটির অধিকার কর্মীরা এই আইনের তীব্র সমালোচনা করছিলেন। নারীদের জন্য কঠোর পোশাক আইন করা কয়েক দশক ধরে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এর আগে বিক্ষোভ হয়েছে।
২০২২ সালে পুলিশের হাতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে হিজাব ইস্যুতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। তরুণ নারীরা সরকারের হিজাব নীতি চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছেন। হিজাব বিতর্ক গত সপ্তাহে দেশটিতে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী পারাসতো আহমাদির গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে। তিনি হিজাব পরিধান না করেই ইউটিউবে লাইভ ভার্চুয়াল কনসার্ট করছিলেন। ওই কনসার্ট খুব দ্রুত ভাইরাল হয়। মানুষের তীব্র প্রতিবাদের মুখে একদিন পরেই তাদের মুক্তি দেয়। গত সপ্তাহেও ৩০০ অধিকারকর্মী, সাংবাদিক এবং লেখক নতুন হিজাব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জুলাইয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তখনকার প্রার্থী পেজেশকিয়ান প্রকাশ্যেই হিজাব ইস্যুতে ইরানের নারীদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করা হয় তার সমালোচনা করেছিলেন। তিনি কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন। বহু ইরানি নাগরিকের প্রত্যাশাও ছিল তাই। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, যারা সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে হতাশ।