Mohan Bhagwat: RSS chief Mohan Bhagwat on rising temple-mosque disputes: 'Not acceptable'

Mohan Bhagwat: দেশজুড়ে মসজিদের নীচে মন্দির খোঁজা হচ্ছে, ভারতে এটা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’! উঠতি হিন্দু নেতাদের কড়া বার্তা ভাগবতের

বাবরির মতো ইস্যু আর চাই না। ঘৃণার বশে অন্যের ধর্মকে আক্রমণ কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ বা উদারপন্থী নেতা নন, এই কথাগুলি বলছেন সরসংঘপ্রধান মোহন ভাগবত। পুণেতে ‘বিশ্বগুরু ভারত’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গিয়ে উঠতি হিন্দু নেতাদের ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ করা নিয়ে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন আরএসএসপ্রধান।

অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পরে আদালতে দাবি উঠেছে, এ বার মথুরায় শাহি ইদগাহ মসজিদ ও বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ সরানো হোক। অতি সম্প্রতি একই দাবি উঠেছে সম্ভলের শাহি জামা মসজিদকে ঘিরেও। অতীতে এই সমস্ত জায়গায় মন্দির ছিল, এমনটা দাবি করে ফের তা নির্মাণের দাবিও উঠেছে। এমনকী রাজস্থানের আজমের শরিফ নিয়েও সমীক্ষার দাবি তোলা হয়। যা নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পুণেয় ‘বিশ্বগুরু ভারত’ শীর্ষক বক্তৃতায় ভাগবত বলেন, “রামমন্দির তৈরি হওয়ার পর কেউ কেউ মনে করছেন তাঁরা নতুন নতুন জায়গায় একই ধরনের বিষয় সামনে এনে হিন্দুদের নেতা হয়ে উঠবেন। এটা মানা যায় না।”

বৃহস্পতিবার ভাগবত কার্যত মনে করিয়ে দেন, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। তিনি বলেন, ‘ভারতের সেই নজির গড়ে তোলা উচিত, যেখানে বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী ও সম্প্রদায়ের মানুষ একইসঙ্গে পাশাপাশি সহাবস্থান করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ইদানীং কিছু হিন্দু নেতা দেশের নানা প্রান্তে অযোধ্যার রাম মন্দিরের মতো ‘ডিসপিউট’ তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। এটা গ্রহণযোগ্য নয় একেবারেই।দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার ডাক দিয়ে ভাগবত বলেছেন, মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব যেমন ধর্মীয় সম্প্রীতির অনেক ক্ষতি করেছেন, আবার বাহাদুর শাহ জাফর ১৮৫৭ সালে গো হত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন দেশে।

ভাগবত বলেন, ‘রাম মন্দির একটা বিশ্বাস ও আস্থার বিষয় ছিল। আর হিন্দুদের মনে হয়েছিল, এটা অবশ্যই গড়ে তোলা উচিত। কিন্তু, যেভাবে নতুন বেশ কিছু স্থানে একই ধরনের ইস্যু তুলে ধরা হচ্ছে, এবং তার ফলে যে ঘৃণা এবং শত্রুতার বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে, তা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

তাঁর মতে, সমাজে এই ধরনের বৈষম্য ও বিবাদ মেটানোর সবথেকে ভালো উপায় হল – প্রাচীন সংস্কৃতিতে ফিরে যাওয়া। খুবই তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভাগবত বলেন, ‘চরমপন্থা, আগ্রাসী মনোভাব, জোর জবরদস্তি করা এবং অন্য ধর্মে আরাধ্যকে অপমান করা আমাদের সংস্কৃতি নয়।’

যদিও অনেকেই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ভাগবত এতদিন মুখ খোলেননি কেন। আরএসএস সূত্রে বলা হচ্ছে, সঙ্ঘ প্রধান আগেই মসজিদের নীচে মন্দির খোঁজার অভিযানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তবে আরএসএস তাদের অনুমোদিত সংগঠনগুলির কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করে না। সংগঠনের অবস্থান তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় মাত্র।

মসজিদকে মন্দির বলে দাবি করার অভিযান নিয়ে আরএসএস প্রধান বলেছেন, দেশের সংবিধানের শাসন আছে। কেউ ইচ্ছামতো যা কিছু দাবি করতে পারে না। সম্প্রীতির একাধিক নির্দশনও তুলে ধরেন ভাগবত। তিনি জানান, রামকৃষ্ণ মিশনে বড়দিন উদ্‌যাপিত হয়। এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “কেবল আমরাই এই কাজ করতে পারি। কারণ আমরা হিন্দু।” সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নিয়ে ভাগবতের ব্যাখ্যা, “এখানে সবাই সমান। এখানে সবাই নিজের মতো করে উপাসনা করতে পারেন। বাঁচার জন্য যেটা প্রয়োজন তা হল, সম্প্রীতি আর আইনশৃঙ্খলা মেনে চলা।”