স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চেয়েছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হোন গতমাসে অবসর নেওয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। কিন্তু ওই পদের জন্য শেষ পর্যন্ত বেছে নেওয়া হল সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভি রামসুভ্রমনিশানকে। ২০২৭- এর ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ওই পদে থাকবেন। গত বছর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কমিশনের সদস্য হিসেবে জাতীয় শিশু অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ডা. বিদ্যুৎ রঞ্জন সারেঙ্গীকে নিয়োগ করলেন রাষ্ট্রপতি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বেছে নিতে গত ১৮ ডিসেম্বর উচ্চ পর্যায়ের কমিটি বৈঠকে বসে। কমিটির প্রধান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কমিটির অন্য সদস্যেরা হলেন লোকসভার স্পিকার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা এবং রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। জানা গিয়েছে বৈঠকে কমিটির প্রধান প্রধানমন্ত্রী মোদী ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব দিলে তীব্র আপত্তি করেন খাড়্গে ও রাহুল। প্রধান বিচারপতি হিসাবে চন্দ্রচূড়ের কাজ নানা মহল থেকে সমালোচিত। তাঁর দেওয়া বেশ কিছু রায় দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই চন্দ্রচূড়ের নাম নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। সূত্রের খবর, বিচারপতি চন্দ্রচূড়ও বিতর্ক আঁচ করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
যদিও, যে ভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধানকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে কংগ্রেস। বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে নিজেদের বিরুদ্ধমত জানিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে লিখেছেন, ‘পারস্পরিক আলোচনা’ ছাড়াই ‘আগাম গৃহীত’ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জাতীয় মানবাবিকার কমিশনের প্রধানকে বাছা হয়েছে।
রাহুল এবং খড়্গে মানবাধিকার কমিশনের প্রধান হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত দুই বিচারপতি রোহিন্টন ফলি নরিম্যান এবং কেএম জোসেফের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কমিশনের সদস্য হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস মুরলীধর এবং আকিল আব্দুলহামিদ কুরেশির নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে, ‘মানবাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সুনাম’ রয়েছে প্রত্যেকেরই।
গত ১ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র অবসরগ্রহণ করার পর এত দিন ওই পদে স্থায়ী ভাবে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। সাত মাস পর নয়া চেয়ারম্যান পেল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।