হিন্দু ধর্মে পূজার সময় অনেক ধরনের নিয়ম মেনে চলার বিধি আছে। এমন পরিস্থিতিতে মহিলাদেরও অনেক নিয়মের প্রতি যত্ন নিতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল, পিরিয়ডের সময় মহিলাদের পূজা করা ও কোনও মন্দিরে যাওয়া ইত্যাদি নিষিদ্ধ। এমতাবস্থায় নারীদের মনে প্রায়ই অনেক ধরনের প্রশ্ন আসে, পিরিয়ডের সময় পুজো বা ব্রত রাখা যাবে কি না। এই সময়ে পুজো করলে ফল পাওয়া যায় কি না। কেন ঠাকুরকে স্পর্শ করতে পারব কি না ইত্যাদি।
এই সময়ে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল কেউ যদি পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে ব্রত রাখে এবং তার পিরিয়ড হয়, তাহলে এই অবস্থায় তাদের কী করা উচিত? এ সময় ব্রত পালন করা যাবে কি না? এমন প্রশ্ন প্রায়ই সবার মনেই থেকে যায়।
প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা বিশ্বাসগুলোর পেছনে অবশ্যই কোনও না কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে। পিরিয়ডের সময় উপাসনা না করার কারণ ছিল সেই সময়ে জপ ছাড়া পূজা পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে বিবেচিত হত না। একই সময়ে, পূজার জন্য সময় অনেক লাগত, এবং যে রীতি ও আচারগুলি পালন করতে হত, তার জন্য প্রচুর সময় এবং দৈহিক শক্তির প্রয়োজনে ছিল। এই অবস্থায় কোনও ঋতুমতির পক্ষে এই কঠিন কাজ করা উচিত নয়, তাই এই কারণে বলা হত যে পিরিয়ডস এর সময় ঠাকুর ঘরে ঢোকা নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: ভক্তশূন্য কাশীপুর উদ্যানবাটিতে এবার পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব
এছাড়া সেই সময় যজ্ঞ ও পুজো রীতি পালনে যে মন্ত্রগুলি পাঠ করা হত তা পরম পবিত্রতার সঙ্গে জপ করা হত। পিরিয়ডের সময়, হরমোনের পরিবর্তনের কারণে প্রচুর ব্যথা এবং ক্লান্তির ফলে কোনও মহিলাদের পক্ষে বেশিক্ষণ বসে জপ করা বা আচার-অনুষ্ঠান করা সম্ভব ছিল না। এজন্য তাকে পূজায় বসতে নিষেধ করা হত।
এছাড়া পূজা সব সময় পবিত্রতার সঙ্গে করা হয়। আর আগের যুগে পিরিয়ডের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার তেমন কোনও উপায় ছিল না, তাই তাদের ব্রত পালন করা নিষিদ্ধ ছিল। সেই সময় ঋতুমতি মহিলাদের থাকার জন্য একটি আলাদা কক্ষ দেওয়া হত। কিন্তু নারীদের মানসিক পূজা ও জপ করতে কখনোই নিষেধ করা হয়নি। কোনও গ্রন্থে এমন কোনও উল্লেখ করা নেই। যেখানে দেবী মা নিজে স্বয়ং ঋতুমতি হন, সেই সময় তাঁকে দর্শনের জন্য কামক্ষা মন্দিরে লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী জড়ো হন, তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে আলাদা কোনও নিয়ম নেই বলেই মনে করেন অনেকে।
আরও পড়ুন: Saraswati Puja: সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে ঠাকুর পাপ দেন! জানুন এই নিয়মের আসল কারণ