২০২২ সালে দাঁড়িয়েও ‘ভার্জিনিটি’ বা কুমারীত্ব নিয়ে সমাজের মনোভাব বদলায়নি। কুমারীত্ব নষ্ট হয়েছে মানেই কোনও নারী ‘অস্পৃশ্য’ কিংবা সে বিবাহযোগ্য নয়, এমন এক ভ্রান্ত ধারণা গ্রাস করে আছে সমাজের একাংশকে। এর জন্য কেউ কেউ বিয়ের আগে অস্ত্রোপচার করে কুমারীত্ব ফিরিয়ে আনেন। অর্থাৎ সতীচ্ছদের পর্দা ফের আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যার পোশাকি নাম ‘হাইমেনোপ্লাস্টি’। এর উদ্দেশ্য, বিয়ের পর প্রথমবার সঙ্গমের পর মেয়েটির যোনি থেকে রক্তপাত ঘটানো। এবার এই অস্ত্রোপচারই অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে চলেছে ব্রিটেনে।
সরকারের বক্তব্য, কুমারীত্ব ফিরে পাওয়ার চিকিৎসাকে যদি মান্যতা দেওয়া হয়, তবে পরোক্ষে কুমারীত্ব রক্ষা করার দাবিকেও মেনে নেওয়া হচ্ছে।গত সোমবার একটি স্বাস্থ্য বিলের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, মেয়েটির ইচ্ছে বা অনিচ্ছে যাই হোক, হাইমেনোপ্লাস্টি বেআইনি বলে গণ্য হবে। গত বছর জুলাইতেই এই আইন আনার অঙ্গীকার করে ব্রিটেন সরকার। সে সময় থেকেই চিকিৎসক, দাই এবং এ নিয়ে প্রতিবাদীরা এই অস্ত্রোপচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানায়। এই নতুন আইন সেই সব মেয়েদের সাহায্য করবে যাদের পরিবার দিনের পর দিন হাইমেনোপ্লাস্টি করার জন্য চাপ দিতে থাকে।
আরও পড়ুন: হরিদ্বারের বিদ্বেষ ভাষণ: ভারতে চরমপন্থীদের নিশানায় সংখ্যালঘুরা, ইমরানের নিশানায় মোদীর ‘নীরবতা’
নতুন আইনে বলা হয়েছে, যে সমস্ত ক্লিনিকে এই ধরনের চিকিৎসা করা হবে বা যে চিকিৎসক এই চিকিৎসা করবেন, তাঁদেরও সমান দোষী বলে গণ্য করা হবে। ধরে নেওয়া হবে তাঁরা এ কাজে মদত দিচ্ছেন। আর অপরাধ প্রমাণ হলে জেল হবে পাঁচ বছর পর্যন্ত। ব্রিটেনের কোনও বাসিন্দা যদি এই চিকিৎসা করাতে দেশের বাইরেও যান, তবুও তাঁকে অপরাধী বলেই গণ্য করা হবে।
আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, পশ্চিম ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্য দেশগুলিতেও এই চিকিৎসা চালু রয়েছে। এমনকি ভারতেও এই সংক্রান্ত চিকিৎসা করা হয়। স্ত্রী-রোগের মূল ধারার চিকিৎসার অধীন নয়। বরং একে প্লাস্টিক সার্জারি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। খরচও প্রচুর। তবে এই চিকিৎসার চাহিদা রয়েছে। ব্রিটেনে ক্লিনিকে এই চিকিৎসার জন্য ৩ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত খরচ পড়তে পারে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার সমান।
আরও পড়ুন: মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিককে জনসমক্ষেই কুৎসিত গালাগালি দিয়ে বিতর্কে Joe Biden