Dhaka Club distributes food among floating people

দিনে একটা ভালো কাজ করলেই বিনামূল্যে খাবার, দিনবদলের স্বপ্ন দেখাচ্ছে ঢাকার হোটেল

খেতে টাকা লাগবে না, বিনিময়ে করতে হবে একটি ভালো কাজ। আর যেখানে এই খাবার দেওয়া হয় তার নাম ‘ভালো কাজের হোটেল’। শুনতে অবাক মনে হলেও এটিই সত্যি, এখানে খেতে টাকা লাগে না। শুধু বলতে হবে, সর্বশেষ কোন ভালো কাজটি আপনি করেছেন। আর যে কোনো একটি ভালো কাজের বিনিময়ে যে কেউ এখানে খেতে পারেন পেটপুরে।বাংলাদেশের ‘ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ’ নামের এই গোষ্ঠী অসামাজিক কাজ আটকাতে এই দারুণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

কীভাবে এমন একটি মহৎ উদ্যোগের শুরু জানতে চাইলে সংগঠনের সদস্য সাকিব হাসান শাওন বলেন, ২০০৯ সালে ঈদে আমরা কয়েকজন চিন্তা করলাম সবাই তো ঈদে আনন্দ ফূর্তি করবে, ভালো খাবার খাবে, আমরা চিন্তা করলাম- ছিন্নমূল মানুষের জন্য কিছু করতে পারি কিনা? এরপরই এই ভাবনা মাথায় আসে। তবে মূল উদ্যোক্তা ছিলেন আরিফুর রহমান, সোহানুর রহমান আসিফ, ফারুক আহমেদ, মনিরুজ্জামান মনির, রুবেল আহমেদ হিমেলসহ বেশ কয়েকজন।

সাকিব হাসান শাওন বলেন, প্রথম দিকে আমরা ১২০ জন সদস্য ছিলাম। এখন ১১২০ জন। প্রত্যেকে প্রতিদিন ১০ টাকা চাঁদা দিই। খাবারের আয়োজন সেই টাকা থেকেই হয়। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ৩৫০ জন আছেন, যারা ধারাবাহিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে খাবার রান্না ও বিতরণ করেন।

আরও পড়ুন: তালিবানের প্রথম সরকারি সফর ইউরোপে, আলোচনার পর মানবিক সাহায্যর সম্মতি আদায়

কীভাবে খাবার বিতরণ করা হয় জানতে চাইলে শাওন বলেন, খাবার দেওয়ার আগে একজন স্বেচ্ছাসেবক নাম, বয়স, পেশা ও কী ভালো কাজ করেছেন লিপিবদ্ধ করেন। এরপর শুরু হয় খাবার দেওয়া। কী ধরনের ভালো কাজ বেশি দেখা যায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্ধ বা শিশুকে রাস্তা পারাপারে সহায়তা, রিকশা ভাড়া না নিয়ে অসহায় মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু বিশেষ করে কাঁচের টুকরো, ইট পাথর সরিয়ে ফেলা এবং কাঁধে বোঝা বহন করতে কষ্ট হলে সহায়তা করার মতো অনেক ভালো কাজ করেন অনেকে। আর যদি কেউ সারাদিনে একটিও ভালো কাজ না করতে পারেন,তাহলেও অবশ্য তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। বিনামূল্যের এই হোটেলেও আছে ধার-বাকির ব্যবস্থা,পরের দিন একসঙ্গে দুটি ভালো কাজ করলেই হবে।

জানা গিয়েছে ২০০৯ সালে বিশেষ কয়েকটি দিনে এ ধরনের আয়োজন হত। ২০১৯ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার করা হয় আয়োজন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউন শুরু হলে প্রতিদিন একবেলা করে খাবারের আয়োজন করা হয়। ঢাকার ৫টি পয়েন্টে খাবার বিতরণ করা হয়- কমলাপুর, সদরঘাট, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর, বনানী কবরস্থান এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন। এসব জায়গার মধ্যে প্রতিদিন কমলাপুরে সন্ধ্যা বা রাতে খাবার দেওয়া হয়। বাকি চারটি স্থানে সপ্তাহে একদিন খাবার বিতরণ করা হয়।

প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিনশ লোকের খাবার রান্না হয়।রবি থেকে বৃহস্পতি, খাবারের মেন্যুতে থাকে ডিম-খিচুড়ি। শুক্র ও শনিবারের খাদ্য তালিকায় বিরিয়ানি, পোলাও বা মুরগি তেহারির ব্যবস্থা থাকে।

আরও পড়ুন: ইতিহাসে এই প্রথম, উটের পিঠে জকি হিসেবে আত্মপ্রকাশ সৌদি নারীদের