রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের জেরে যেমন মাথায় হাত শেয়ার মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের, তেমনই চিন্তিত বিয়ার কোম্পানিগুলো। বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে রাশিয়া-ইউক্রেনের সংকটময় পরিস্থিতির পারদ যেভাবে চড়ছে তাতে সেই সংকটের ছায়া পড়তে পারে বিয়ার কোম্পানিগুলির (Beer Company) উপরে।
শীত তো বটেই, গরমেও ভারতে প্রচুর পরিমাণে বিয়ার বিক্রি হয়। তাই এই মরশুম কোম্পানিগুলি বড়সড় লাভের মুখ দেখে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যে চলমান উত্তজনা জারি রয়েছে, আর দিনে দিনে ক্রমশ সেটি প্রকট হচ্ছে সেই বিষয়টি যথেষ্ট ভাবাচ্ছে ভারতের বিয়ার কোম্পানিগুলোকে। উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়েছে অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর। ২৪ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামরিক পদক্ষেপের ঘোষণার পর অপরিশোধিত তেলের দামে যেন আগুন লেগেছে। বিশ্বজুড়ে পেট্রোল ও ডিজেলের হারে রেকর্ড ভাঙা বৃদ্ধি।
সারা পৃথিবীতে বিয়ার উৎপাদনে রাশিয়া এবং ইউক্রেনে বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কারণ বিয়ারের জন্য লাগে গম। সারা পৃথিবীর গম উৎপাদনের নিরিখে রাশিয়া এক বা দু’নম্বরে থাকে। ইউক্রেনও প্রতি বছর থাকে প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে। সারা পৃথিবীতে গমের যত চাহিদা, তার প্রায় ২৫ শতাংশই আসে এই দু’টি দেশ থেকে। এরকম অবস্থায় দুই দেশের যুদ্ধের কারণে গমের উৎপাদন এবং তার বণ্টনে চাপ পড়েছে। এখানেই শেষ নয়, বিয়ারের জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বার্লি। বার্লি উৎপাদন এবং রফতানিতেও এই দু’টি দেশ সারা পৃথিবীর মধ্যে প্রথম পাঁচটি দেশের তালিকায় থাকবে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশের বিয়ার প্রস্তুতকারী সংস্থারগুলির সংগঠনের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে চলেছে বার্লির দাম। তার প্রভাব যে বিয়ারের উপর পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিয়ার ক্যাফের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাহুল সিং বলেন, ‘গত দু’বছর ধরে ব্যবসায় মন্দা গিয়েছে। এবার এই যুদ্ধের ফলে ফের প্রভাব পড়তে চলেছে। দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে কবে তা হয় এখনই বলা যাচ্ছে না।’ যদি সত্যি সত্যিই দাম বাড়ে তাহলে সুরাপ্রেমীদের কাছে তা অত্যন্ত খারাপ খবরই।