বাড়িতে অ্যাকোয়ারিয়াম করার একাধিক সুবিধা। আপনার বসার ঘরের সৌন্দর্য্য দ্বিগুণ সুন্দর করে তুলবে অ্যাকোরিয়াম। সুপ্রভাব পাবেন আপনার স্বাস্থ্যেও। চিকিত্সকদের মতে, ঘরে অ্যাকোয়ারিয়াম থাকলে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তার সঙ্গে কমে দুশ্চিন্তা, মনযোগের অভাবের মতো সমস্যা। বাস্তু মতে, বাড়ির বসার ঘরে অ্যাকোয়ারিয়াম বাড়ির কর্তার পক্ষে বেশ শুভ।
কিন্তু সঠিক পরিচর্যা না হলে অ্যাকোয়ারিয়াম আবর্জনাতে ভরে যেতে পারে। খারাপ হয়ে যেতে জলের মানও। এর ফলে মাছের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। হতে পারে মৃত্যুও। দেখে নিন কী ভাবে সহজেই যত্ন নেওয়া যেতে পারে অ্যাকোয়ারিয়ামের।
১। সাইক্লিং
অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ ছাড়ার আগেই এই কাজটি সেরে নেওয়া প্রয়োজন। আসলে জলের মান মাছের জন্য উপযুক্ত করে তোলার পদ্ধতির নামই সাইক্লিং। মাছ ছাড়ার অন্তত এক সপ্তাহ আগে জলে অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই ধরনের অণুজীব জলের আবর্জনাকে বিয়োজিত করে সেই জল মাছের বসবাসের উপযোগী করে তোলে। বাজার থেকেই এই উপাদান কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু মনে রাখবেন অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ থাকলে কোনও মতেই সাইক্লিং করা উচিত নয়।
২। জলের মান নিয়ন্ত্রণ
অ্যাকোয়ারিয়ামের জলে প্রাকৃতিক ভাবেই অ্যামোনিয়া, নাইট্রেট কিংবা নাইট্রাইট জাতীয় যৌগ উপস্থিত থাকে। কিন্তু এই ধরনের যৌগগুলির মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে মাছের স্বাস্থ্যের পক্ষে তা খারাপ হতে পারে। একই ঘটনা ঘটতে পারে জলের অম্লত্বর ভারসাম্য নষ্ট হলেও। এই পদার্থগুলির মাত্রা মাপার জন্য বিশেষ ধরনের কিট কিনতে পাওয়া যায় বাজারে। প্রতি সপ্তাহে এই উপাদানগুলির মাত্রা পরীক্ষা করা বাঞ্ছনীয়। জলের মান ঠিক রাখতে প্রতি সপ্তাহে অ্যাকোয়ারিয়ামের এক তৃতীয়াংশ জল বার করে দিয়ে পরিশুদ্ধ জল ঢালতে হবে।
আরও পড়ুন: Life Hacks: বাক্সবন্দি লেপ-কম্বল ব্যবহারের আগে যা করবেন
৩। মাছের খাবার
সব মাছ একই ধরনের খাবার খায় না। এমনকি, এক এক ধরনের মাছ জলের এক এক স্তর থেকে খাদ্যবস্তু সংগ্রহ করে। কাজেই অ্যাকোয়ারিয়ামে থাকা মাছের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে অবগত থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার না মিললে যেমন মাছের স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে তেমনই অতিরিক্ত খাবারও তৈরি করতে পারে সমস্যা। আবার এই খাবার অ্যাকোয়ারিয়ামে বাড়াতে পারে আবর্জনাও।
৪। কী মাছ কিনবেন
মাছ দেখতে ভাল লাগলেই কিনে ফেলা উচিত নয়। কোন মাছ কোন উষ্ণতার জলে থাকে, কতটা স্থান প্রয়োজন কিংবা একাধিক প্রজাতির মাছ একই সঙ্গে থাকতে পারে কি না তা বুঝে নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যেন মাছের সংখ্যা অতিরিক্ত না হয়ে যায়।
৫। তলদেশ সাফাই
অ্যাকোয়ারিয়ামের তলদেশে থাকা পাথর নিয়মিত পরিষ্কার না করলে তা অত্যন্ত নোংরা হয়ে যেতে পারে। প্রতি সপ্তাহে এই পাথর পরিষ্কার করা উচিত। বর্তমানে সাইফন কিংবা ভ্যাকিউম যন্ত্রের মাধ্যমে সহজেই এই তলদেশের পাথর সাফ করা যায়।
অ্যাকোরিয়াম একটি কৃত্রিম বাস্তুতন্ত্র। তাই খালি শুধু মাত্র সাজানোর লক্ষ্যে অ্যকোয়ারিয়াম না করাই ভাল। অ্যাকোয়ারিয়ামের বাসিন্দাদের যত্ন নিতে পারলে তবেই এগোন।
আরও পড়ুন: Summer Home Decor: গরমকালে অন্দরসজ্জা আরও আরামদায়ক করে তুলুন এইভাবে