যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ শুক্রবার রাতে পবিত্র শবেবরাত(shab e barat mubarak) উদযাপিত হচ্ছে। হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটিকে মুসলমান সম্প্রদায় সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকে।
পবিত্র শবেবরাত মুসলমানদের কাছে লাইলাতুল বরাত নামেও পরিচিত। আরবি শব্দ লাইলা অর্থ রাত।ফারসি শব্দ শব অর্থও রাত। আর বরাত অর্থ মুক্তি বা নিষ্কৃতি। শবেবরাত অর্থ মুক্তির রজনী। শাবান মাসের ১৪ তারিখের এই রাতকে মুক্তির রাত বা নাজাতের রাত হিসেবে অভিহিত করা হয়। মহিমান্বিত এই রাতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন।
এই রাতে সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপ থেকে মুক্তি কামনা করে মুসলমান সম্প্রদায় প্রার্থনা করে। এই রাতে অনেকেই নফল নামাজ(shab e barat namaz), কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া করে থাকেন(shab e barat ki fazilat)। এ ছাড়া অনেকেই এই রাতে মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন।
বাংলাদেশ, ভারত(shab e barat 2022 in india), পাকিস্তান, ইরানসহ কয়েকটি দেশে শবেবরাত পালনের ব্যাপকতা লক্ষ্য করা যায়। সৌদি আরবে শবেবরাতের কোনো অস্তিত্ব নেই। ইরানে শবেবরাত শিয়া মাজহাবের দ্বাদশ ইমাম হযরত ইমাম মাহদির জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। এই রাতে ইরানের সর্বত্র আলোক সাজসজ্জা করা হয় ও বিশেষ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
হাদিস জগতের সবচেয়ে বিশুদ্ধতম গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিম শরিফে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান নিয়ে কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। তবে সিহাহ সিত্তার অন্যান্য গ্রন্থে এ সম্পর্কে একাধিক হাদিস পাওয়া যায়। যেমন ইবনে মাজাহর ১৩৮৮ নম্বর হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রজনী আসে, তখন তোমরা রাতে দণ্ডায়মান থাকো এবং দিবসে সিয়াম পালন করো। কারণ, ওই দিন সূর্যাস্তের পর মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিক তালাশকারী আছে কি? আমি তাকে রিজিক প্রদান করব। কোনো দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি আছে কি? আমি তাকে মুক্ত করব। এভাবে সুবহে সাদিক উদয় পর্যন্ত চলতে থাকে। হাদিসের ইমামদের মত অনুযায়ী, এই হাদিস অত্যন্ত দুর্বল।
বুখারি ও মুসলিম শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের শেষ এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করে বলেন, আমাকে ডাকার কেউ আছে কি? আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। আমার কাছে চাওয়ার কেউ আছে কি? আমি তাকে তা প্রদান করবো। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার কেউ আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করবো।
কিভাবে এলো শবেবরাত?
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, শবেবরাত বলে ৪০০ হিজরির আগে কিছু ছিল না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম এর দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়াতী জীবনে, এমনকি সাহাবীদের যুগেও এই ধরনের কোনো দিবস পালনের কথা ইসলামের ইতিহাসে নেই। শবেবরাত সর্বপ্রথম চালু হয়েছিল ৪৪৮ হিজরিতে বায়তুল মুকাদ্দাসে (মাসজিদুল আকসায়)।