রামপুরহাট কাণ্ডের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা বাদে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এই ‘জঘন্য ঘটনা’য় দুঃখপ্রকাশ করেও আপাতত রাজ্য সরকারর উপরই আস্থা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আশা, রাজ্য সরকার দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে। সেই কাজে কেন্দ্রও রাজ্যকে সবরকম সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মোদী ।
বুধবার বিকেলে ভার্চুয়ালি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিপ্লবী ভারত গ্যালারির উদ্বোধন করেন মোদী। সেখানে ভাষণ শুরুর আগেই মোদী বলেন, ‘সবার আগে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের হিংসার ঘটনায় শোকাহত। আমি আশা করছি যে রাজ্য সরকার বাংলার মাটিতে এরকম জঘন্য পাপ যারা করেছে, তাদের অবশ্যই শান্তি দেবে। আমি বাংলার মানুষকে আবেদন করব, এরকম নৃশংস ঘটনা যারা করেছে এবং যারা এই অপরাধীদের মদত জোগায়, তাদের যেন কখনও ক্ষমা না করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আমি আশ্বস্ত করছি যে অপরাধীদের দ্রুত সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যা সাহায্য করবে, তা ভারত সরকার করবে।’
রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, মঙ্গলবারই এই ঘটনা তুলে ধরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে তিনি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রয়োজন বলেও দাবি তোলেন। বুধবার লোকসভায় সাংসদ সুকান্ত ফের সরব হন বগটুই গ্রামের ঘটনা নিয়ে। একই সঙ্গে রাজ্যে সাম্প্রতিক কালের বিভিন্ন রাজনৈতিক সঙ্ঘাত ও হত্যার কথা তুলে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারে হস্তক্ষেপের দাবি জানান।
#WATCH | I express my condolences over Birbhum violence, WB. Whatever help is needed to book culprits, I assure all possible help from Centre to State. I hope state govt takes strict action against culprits, & those who encourage such criminals should not be forgiven too: PM Modi pic.twitter.com/AEXKAew4JP
— ANI (@ANI) March 23, 2022
গত সোমবার রাতে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। তারপরেই তাণ্ডব শুরু হয় বগটুই গ্রামে। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, আটজন মারা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দমকল দাবি করেছিল, ১০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিক্রিয়া দেন বেছে বেছে। ন্যায় অন্যায়ের থেকেও তার কাছে চিরদিন বড় রাজনীতি। বহু সময় তাঁর বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া তাঁর ভক্তদের উৎসাহিত করে। দাদরি কাণ্ডের দীর্ঘদিন কেটে যাওয়ার পর তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। ফলে তাঁর ভক্তদের অনেকেই বিদ্বেষ হিংসা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি মনে করেছিল। এর পর থেকে দেশ জুড়ে বহু সিংসার ঘটনা ঘটেছে কেবল ধর্মীয় বিদ্বেষকে সামনে রেখে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এমন হিংসার ঘটনা ঘটলে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার তেমন তাগিদ অনুভব করেন না মোদী। কিন্তু অবিজেপি শাসিত রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দিতে তেমন তেমন একটা কালক্ষেপ করেন না। বীরভূমের ঘটনার ক্ষেত্রেও তিনি সেটাই করেছেন।