আনিশ খানের রহস্যমৃত্যু, একইদিনে ঝালদা-পানিহাটিতে খুন দুই নবনির্বাচিত কাউন্সিলর, সর্বোপরি রামপুরহাটের বগটুইয়ে গণহত্যা ৷ হিংসার আঁতুড়ঘরে পরিণত বাংলা, অথচ মুখে কুলুপ সমাজের বিশিষ্টদের ৷ স্বাভাবিকভাবেই তথাকথিত বিশিষ্টদের মৌনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন বিরোধীরা ৷ তবে দেরিতে হলেও রাজ্যের হিংসার ঘটনায় মৌনতা ভাঙলেন বিশিষ্টরা ৷ বাংলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুণী ২২ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি শনিবার পৌঁছল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরবারে (Bengal Civil Society writes a letter to Mamata Banerjee over recent violence in State) ৷ সমাজের যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতই বগটুই গণহত্যাকে ‘পৈশাচিক’ বললেন অপর্ণা, ধৃতিমান, বোলান, শ্রীজাত, অনুুপম, পরম, কৌশিক, অনির্বাণ ও আরও অনেকে ৷
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা সেই খোলা চিঠি ফেসবুকে তুলে ধরেছেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ওই খোলা চিঠিতে পোস্ট করে তার সঙ্গে ঋদ্ধি লিখেছেন, ‘আমরা নাগরিক সমাজের এক অংশ হিসেবে আমাদের বিবেচনা মতো পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাবলীতে উদ্বিগ্ন হয়ে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে একটি পত্র পাঠিয়েছি। এর পূর্বেও আমরা অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের মতামত প্রকাশ করেছিলাম। এবার একত্রিত হয়ে আমাদের ভাবনা ব্যক্ত করলাম। আশা করি প্রশাসন আমাদের মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন।’
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: সোমবার ইডির দফতরে হাজিরা! একদিন আগেই দিল্লিযাত্রা সস্ত্রীক অভিষেকের
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি মার্চ মাসে বীরভূমের রামপুরহাটে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডটিকে যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পৈশাচিক আখ্যা দেবেন৷ আমরাও তার ব্যতিক্রম নই৷ ঘটনা পরবর্তীতে আপনার তত্ত্বাবধানে প্রশাসন, অনুসন্ধান এবং ক্ষতিপূরণ দানে তৎপর হয়েছে এবং এই পদক্ষেপকে নিঃসন্দেহে স্বাগত৷ কিন্তু তাও প্রশ্ন থেকে যায়, এরকম একটি ঘটনার আগে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হল না কেন? দেশের অধিকাংশ অংশে গরিষ্ঠতাবাদী বিভাজন সৃষ্টিকারী শক্তি বাংলাতে আপনার জন্যই মাথা তুলতে পারেনি৷কিন্তু রাজ্যের ভিতরে ভুলত্রুটিগুলো না-শোধরালে বিভেদ সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক শক্তি তার ফায়দা নেবে৷’ একইসঙ্গে চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিদের কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ নেই বলেও জানান তাঁরা ৷
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীকে যে খোলা চিঠিটি দেওয়া হয়েছে, তাতে সই করেছেন মোট ২২ জন। এর আগে ব্যাক্তিগত স্তরে কেউ কেউ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন বটে। কিছুদিন আগে স্টুডেন্টস এগেনস্ট ফ্যাসিজ়ম-এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিলেও পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল শহরের অনেক বিশিষ্টজনদের। কিন্তু ২২ জনের সই সহ এই চিঠি নিঃসন্দেহে আলাদা বার্তা বহন করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: Trolley Bus: ট্রামের আদলে কলকাতার রাজপথে চলবে ট্রলি বাস, যাত্রা শুরু কবে?