বেহালা কাণ্ডে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাপন। তার সঙ্গে থাকা আরও ৬ যুবককেও গ্রেপ্তার করেছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা। হাওড়া গ্রামীণ এলাকার জয়পুরে একটি খামার বাড়ি থেকে পাকড়াও করা হয় তাদের। ধৃতদের রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে।
১২ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে চড়ক মেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বেহালা । আর সেই ঘটনায় অন্যতম পলাতক অভিযুক্ত সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবন ৷ বেহালা থানা এলাকার চড়কতলায় পয়লা বৈশাখের দিন চড়ক মেলা হয় ৷ এর সিন্ডিকেট এবং তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে ঘাসফুলেরই দুই দলের মধ্যে ঝামেলা হয় বলে অভিযোগ । দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে পরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে সর্মথকরা । বেহালা পুলিশের সামনেই গুলি চালানো হয়, ইট-পাথর ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ । এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কিছু গাড়ি পরপর ভাঙচুর করে অভিযুক্তরা । এলাকায় দিনভর জারি ছিল উত্তেজনা। তারপর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যায় বেহালার ১২১ নং ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি সোমনাথ ওরফে বাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ৪০ জন পড়ুয়া-সহ উধাও সল্টলেকের স্কুলের ৩টি বাস, চারঘণ্টা পর মিলল খোঁজ
বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত বাপনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে বেহালার চড়কতলা। স্থানীয় বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি ও কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখান দলের একাংশ। এরপর ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রত্নাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ঘটনার বিস্তারিত জানতে চান। ঘটনায় প্রকৃত দোষী অবশ্যই যথাযথ শাস্তি পাবে, এমনই আশ্বাস দেন তিনি। কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বেহালা থানাকে । কেন রাতের শহরে উত্তেজনা ছড়াল আর পুলিশ তা আয়ত্তে আনতে পারল না ? মুহূর্তের মধ্যে কী ভাবে ২০০ থেকে ৩০০ লোক এলাকায় জড়ো হয়ে গেল ? পুলিশের সামনে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কেন কিছু করতে পারল না?
অভিযুক্তদের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় হাওড়া গ্রামীণ এলাকার জয়পুরের ধড়দুবড়া এলাকা থেকে সোমনাথ-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা। সোমনাথ ছাড়া বাকি ধৃতেরা হল বিপ্লব ভর, দেবরাজ ওরফে রানা, বাপি ভুঁইঞা, বীর বিজয়, সুপ্রিয় সেনগুপ্ত ওরফে বাবাই, সুমন পাল। ধৃতদের রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে। তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার ভাবনাচিন্তা তদন্তকারীদের।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বেহালা কাণ্ডের পর পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বাণিজ্যিক গাড়িতে চড়ে এলাকা ছাড়ে ওই সাত অভিযুক্ত। প্রথমে বারাসতে চলে যায় তারা। সেখান থেকে ওড়িশার বালেশ্বর হয়ে দিঘায় পৌঁছয় সোমনাথ-সহ সাতজন। এরপর এক পরিচিতের সঙ্গে যোগাযোগ করে জয়পুরে এসে পৌঁছয় তারা। সেখানেই একটি খামারবাড়িতে থাকছিল সকলে। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে জয়পুর থেকেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: Ballygunge: বুদ্ধবাবুর পাড়ায় জয়, সায়রা হালিমের ছোঁয়ায় অক্সিজেন পেল CPIM