ভাল নেই সলমন রুশদি। শুক্রবার নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানমঞ্চেই ছুরিবিদ্ধ হন বিখ্যাত লেখক। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে এয়ারলিফ্ট করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই অস্ত্রোপচার করতে হয়। বর্তমানে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সংবাদসংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, সুস্থ হয়ে গেলেও একটি চোখ হারাতে পারেন বিখ্যাত লেখক। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কেন হামলা চালাল, তার কারণ খতিয়ে দেখছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
রুশদির এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি একটি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সলমন সম্ভবত একটি চোখ হারাবেন; তাঁর হাতের স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে; এবং ছুরিকাঘাতে তাঁর লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা আপাতত মনে করছেন, রুশদির আঘাত গুরুতর হলেও তা নিরাময়যোগ্য। যদিও ভবিষ্যতে তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। অ্যান্ড্রু আরও জানিয়েছেন যে, রুশদি এখনও কথা বলতে পারছেন না।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিম নিউ ইয়র্কের একটি কাউন্টিতে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল রুশদির। পরিচিতি দেওয়ার সময় এক ব্যক্তি মঞ্চে উঠে পড়েন। এরপরই লেখককে ঘুষি মেরে তাঁকে ছুরি দিয়ে কোপানো হতে থাকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ থেকে ১৫ বার সলমনের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে হামলাকারী। এর জেরে মুখ থেকে শুরু করে সলমনের পেটের বিভিন্ন অংশে ক্ষত রয়েছে।
১৯৮১-তে বুকার পেয়েছিল রুশদির সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’। এর পর ২০০০ সালে তাঁর ‘মুরস লাস্ট সাই’ বইটিও বুকারের মনোনয়ন তালিকায় উঠেছিল। তার ১৯ বছর পর ২০১৯ সালে বুকার পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রাপকের তালিকায় ঠাঁই পায় রুশদির ‘কিশোট’ উপন্যাস।
আরও পড়ুন: চলে গেলেন নারায়ণ দেবনাথ , রেখে গেলেন নন্টে, ফন্টে, হাঁদা, ভোঁদা, বাঁটুল, কেল্টুদের
Salmon Rushdie stabbed at Chautauqua. He’s on the stage being treated. Before his scheduled speech. pic.twitter.com/xqeM79WseB
— Mary Newsom (@marynewsom) August 12, 2022
রুশদির কলম থেকেই বেরিয়েছিল ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’। যে বইয়ের কারণে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি। অপরাধ— ‘ধর্মদ্রোহ’। খোমেইনি মারা গিয়েছেন, কিন্তু ‘ফতোয়া’ জারি থেকেছে বছরের পর বছর। সলমনের মাথার দাম রাখা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক ১৩ বছর বেনামে কাটিয়েছেন। প্রতিনিয়ত পুলিশি পাহারায় কার্যত ‘বন্দি’ থেকেছেন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ছদ্মনামে’র জীবন থেকে বেরিয়ে আসেন রুশদি। তার বছর তিনেক আগেই তেহরান ঘোষণা করেছিল, লেখকের বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। গত বিশ বছর ধরে নিউ ইয়র্কেরই বাসিন্দা রুশদি।
আরও পড়ুন: বইয়ের ট্রাম! টালিগঞ্জে এবার ট্রামের পেটে আস্ত বইপাড়া