প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়াকে হারিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নতুন সভাপতি হলেন কল্যাণ চৌবে। অর্থাৎ এবার দেশের ফুটবলের গুরুদায়িত্ব প্রাক্তন ফুটবলার তথা বিজেপি নেতা কল্যাণ। প্রথমবার ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ মসনদে বসলেন কোনও ফুটবলার। যদিও বাইচুং (Bhaichung Bhutia) ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের পরোক্ষ সহযোগিতাতেই নির্বাচনে জয়ী কল্যাণ।
টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন কল্যাণ চৌবে। ১৯৯৬ সালে গোল্ডেন ব্যাচে তিনি পাশ করেন। শেষবার কৃষ্ণনগর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে পরাস্ত হয়েছিলেন তিনি। ভারতের সিনিয়র ফুটবল দলের হয়ে কখনও খেলতে না পারলেও বেশ কয়েকবার স্কোয়াডে তাঁকে রাখা হয়েছিল। যদিও আন্তর্জাতিক বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে তিনি বেশ কয়েকবার ভারতের হয়ে খেলেছেন। বাইচুং এবং কল্যাণ একসময় ইস্টবেঙ্গল ফুটবল দলে একে অপরের সতীর্থ ছিলেন।
মাঠের বাইরের লড়াইয়ে প্রাথমিক রিপোর্টে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন কল্যাণ (Kalyan Chaubey)। ফল প্রকাশের পরও সেই ছবিই স্পষ্ট হল। সভাপতি নির্বাচনে যেখানে ৩৩টি ভোট পড়েছে কল্যাণের নামে, সেখানে মাত্র একটি ভোট পেয়েছেন বাইচুং। প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের ভোটাধিকার বাতিল হওয়ায় রাজ্য সংস্থা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ধরে মোট ৩৪ জন ভোটারকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
Kalyan Chaubey beats football legend Bhaichung Bhutia to become first player-president at All India Football Federation
— Press Trust of India (@PTI_News) September 2, 2022
আরও পড়ুন: AIFF Case: ‘আপনি ভারতীয় ফুটবলকে শেষ করে দিয়েছেন’, সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে প্রফুল্ল প্যাটেল
তবে বাইচুং ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, রাজনৈতিক সহায়তাতেই এআইএফএফের সর্বোচ্চ আসনে কল্যাণ। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দেওয়ার আগেই দিল্লির এক হোটেলে বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কল্যাণ। সেখানেই তার প্যানেল ঠিক করে রেখেছিলেন প্রাক্তন গোলকিপার। তারপরই ফেডারেশনে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। ফুটবলাররা ভোট দিতে পারবেন না, এই নিয়ম বাতিল হওয়ার পর একটা সময় পর্যন্ত বাইচুং ঠিক করেছিলেন, তিনি আর নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন না। কিন্তু বেশ কয়েকটি রাজ্য সংস্থা বাইচুংকে ফোনে অনুরোধ করে প্রেসিডেন্ট পদে তিনি যেন লড়েন। কার্যত যখন ঠিকই হয়ে গিয়েছিল যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন কল্যাণ, তখনই সবাইকে চমকে দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ও রাজস্থানের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ান বাইচুং। কিন্তু দিনের শেষে মাত্র একটি ভোটই এল তাঁর ঝুলিতে।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল ফেডারেশনের নির্বাচন। যার জেরে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে চলছিল AIFF।যা পছন্দ হয়নি ফিফার। ফলে নির্বাসনের মুখে পড়তে হয় ফেডারেশনকে। এমনকী অক্টোবরে ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজনও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপে জটিলতা কাটে। দ্রুত নির্বাচন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই ওঠে নির্বাসন। নির্দেশ মতোই হয় ভোট এবং সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন কল্যাণ।
আরও পড়ুন: হুগলির ফেলু মোদকের মিষ্টিতেই গণেশ পুজো সারলেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীন