রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নামলেন বাম পড়ুয়ারা। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই-এর প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ সমাবেশে অবরুদ্ধে ধর্মতলা চত্বর। ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর তদন্ত, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ, এসবই ছিল আজকের সমাবেশের কারণ।
মঙ্গলবার বামেদের ওই সভায় বক্তৃতা দেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী, সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরি, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি প্রতীকুর রহমান, এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা। এ ছা়ড়াও উপস্থিত ছিলেন নিহত ছাত্র নেতা আনিস খানের বাবা সালেম খান। তিনিও সভায় বক্তৃতা দেন। উপস্থিত ছিলেন, বরুণ সেনগুপ্তর দিদিও।
সমাবেশে অন্যতম বক্তা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এদিনের মঞ্চ থেকে মীনাক্ষী বলেন, গত ১০ বছরে বাংলা দেশের মধ্যে সবথেকে পিছিয়ে গিয়েছেন। রাজ্য সরকারের প্রতিটি মন্ত্রী, এমলা দুর্নীতিগ্রস্ত। শিক্ষামন্ত্রীর অনুগামীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। টাকার বিনিময় চাকরি বিক্রি করা হয়েছে এই আমলে। আজকের এই প্রতিবাদ এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিগ্রস্ত, স্বজনপোষোণকারী সরকারের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, আনিস খান হত্যা থেকে শুরু করে কলকাতার রাস্তায় দিনের পর দিন আন্দোলনে বসা চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্য চাকরি দেওয়া— সব সমস্যার বিহিত চেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ধর্মতলায় ইনসাফ সভার ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্রযুবদের দু’টি শাখা এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। কথা ছিল, শিয়ালদহ স্টেশন, হাওড়া স্টেশন এবং পার্ক স্ট্রিটে বাম ছাত্রযুবরা জমায়েত করে, সেখান থেকে মিছিল করে যোগ দেবেন ধর্মতলার ট্রাম ট্রামিনাসের কাছের সভাস্থলে। অথচ তিনটি মিছিলে আসা জন সামাবেশের জন্য সভার জায়গা ছিল খুবই অল্প পরিসরে।
মঙ্গলবার সকালেও ধর্মতলার ট্রাম টার্মিনাসের পাশে এই সভা হবে বলে ঠিক ছিল। সেই মতো চেয়ার পেতে সাজানো হয়েছিল সভাস্থল। কিন্তু বেলা বাড়তেই দেখা গেল ভিড়ের ঠেলায় উপচে পড়ছে রাস্তা। ভিড় সামলাতে শেষে বাধ্য হয়েই বাম ছাত্রযুবদের সভাস্থল পরিবর্তন করে আনতে হল ধর্মতলার মোড়ে। যার অনতিদূরেই ভিক্টোরিয়া হাউস। যেখানে মাস কয়েক আগে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ করেছিল তৃণমূল। যেখানে ইনসাফ সভার আয়োজন করার অনুমতি চেয়েও পায়নি এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল সেই ভিক্টোরিয়া হাউসের কাছে ধর্মতলার মোড়েই হল ইনসাফ সভা।
তার জেরে সভাস্থল সংলগ্ন চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং লেনিন সরণি দিয়ে ধর্মতলা এলাকায় গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি, বন্ধ হয়ে যায় রাজভবনের দিক থেকেও ধর্মতলার দিকে গাড়ি চলাচলও। কিছু গাড়িকে লেনিন সরণির দিক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। তার জের গিয়ে পৌঁছয় শহরের অন্যান্য অংশেও।
আরও পড়ুন: Howrah Fire: হাওড়া ময়দানে ভয়াবহ আগুন, বন্ধ রাখা হল যানবাহন চলাচল