মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয়। পুরাণ থেকে মহাভারত, মহালয়া ঘিরে নানা কাহিনি রয়েছে । মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের শুরু । অর্থাৎ মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায় । এদিন,অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। হিন্দু ধর্মে মহালয়ার গুরুত্ব অনেক । এদিন, পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে ঘাটে ঘাটে তর্পণ করে বাঙালি । পূর্বপুরুষদের জল প্রদানের রীতি হয়েছে । মহালয়াতেই দেবীর চক্ষুদানের রীতি রয়েছে । তবে, এখন সেই রীতিতে পরিবর্তন এসেছে । এখন মহালয়ার দিন বা মহালয়ার আগের থেকেই পুজো উদ্বোধন হয়ে যায় । তাই দেবীর চক্ষুদানও অনেক আগেই হয়ে যায় ।
মহালয়ায় তর্পণ এক মহালগ্ন মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসানে জগজ্জননী মা দুর্গার (Durgapuja 2022) আগমনবার্তা জানিয়ে যাওয়া আলোকময় এক দিন। বিশ্বাস, এ দিন পূর্বপুরুষদের আত্মাদের স্ব-স্বলোকে ফিরে যাওয়ার দিনও। দেবীপক্ষের সূচনাও এদিন। তাই এই পুণ্যদিনে সন্তানাদির হাতে জল পেয়ে তাঁরা তৃপ্ত হলে, তার থেকে শুভ আর কিছু নেই।
তর্পনের সময় কাদের জন্য কী মন্ত্র পড়তে হয় তাও হয়ত অনেকে ঠিক মত জানেন না। না জানা থাকলে জেনে নিন।পরের বার কাজে লাগবে।
বাবার জন্য তর্পণের মন্ত্র : গোত্রে অসমতপিতা (পিতার নাম) শর্মা বাসুরূপত ত্রিপ্যতামিদম তিলোদকম গঙ্গা জলম ভা তসমই স্বধা নমঃ, তসমই স্বধা নমঃ, তসমই স্বধা নমঃ।
মায়ের জন্য প্রার্থনার মন্ত্র : গোত্রে অসমানমাতা (মাতার নাম) দেবী বাসুরূপাস্ত ত্রিপ্যতামিদম্ তিলোদকম গঙ্গা জলে তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ।
দাদুর জন্য তর্পনের মন্ত্র: গোত্রে অসমতপিতামহ (পিতামহের নাম) শর্মা বাসুরূপত ত্রিপ্যতমিদম তিলোদকম গঙ্গা জলম ভা তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ।
ঠাকুমার তর্পণে জল নিবেদন করার মন্ত্র: গোত্রে পিতাম (ঠাকুমার নাম) দেবী বাসুরূপাস্ত ত্রিপত্যমিদম তিলোদকম গঙ্গা জলে তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ, তস্মৈ স্বধা নমঃ।
পিতৃ গায়ত্রী মন্ত্র : জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, আপনি যদি পৃথক মন্ত্রগুলি পাঠ করতে অক্ষম হন তবে আপনি আপনার পূর্বপুরুষদের পরিত্রাণের জন্য পিতৃ গায়ত্রী পাঠ করতে পারেন। পিতৃ গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করা পূর্বপুরুষদের আত্মাকেও শান্তি দেয়। পিতৃ গায়ত্রী মন্ত্রঃ ওম পিতৃগনয়া বিদমহে জগৎ ধারিণী ধীমহি তন্নো পিত্রো প্রচোদয়াৎ। দেবতাভ্যাঃ পিতৃভ্যাশ্চ মহাযোগীভ্যা ও চ। নমঃ স্বহায়ে স্বদয়াই নিত্যমেব নমো নমঃ। আদ্য-ভূতায় বিদমহে সর্ব-সেব্যয় ধীমহি। শিব-শক্তি-গঠিত পিতৃ-দেব প্রচোদয়াৎ।