মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিশ্বভারতী (Visva Bharati) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবনের সামনে ছাত্রছাত্রীদের করা অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মীরা মত্ত অবস্থায় তাঁদের মারধর করেছেন। এমনকি, নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রীদের ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অশোক মাহাতোর উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ছাত্রদের।
বুধবার সকালে রেজিস্ট্রার পাল্টা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার রাতে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং আধিকারিকদের বাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়েছেন পড়ুয়ারা। তার জন্যই মধ্যরাতে এসে নিরাপত্তারক্ষীরা অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দেন। অধ্যাপকদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু পাথর উদ্ধার হয়েছে দাবি রেজিস্ট্রারের। কিন্তু আন্দোলনরত এক ছাত্রীর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। কেউ ইট ছোড়েনি। বরং নিরাপত্তারক্ষীরাই বেড়া টপকে এসে তাঁদের মারধর শুরু করেন। এর পর অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দেন। ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Minimum wage: বাড়ির পরিচারিকার মাইনে এবার ঠিক করে দেবে মমতার সরকার
প্রায় কুড়ি দিন ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাঁরা দাবি করেন, দীর্ঘ ২০ দিন ধরে উপাচার্য বাড়িতে আটকে থাকার কারণে বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান-সহ বিশ্বভারতীর নানা ছোটখাটো অনুষ্ঠানও করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উপাচার্য বাড়ি থেকে না বেরোতে পারলে বিশ্বভারতীর এই অচল অবস্থাও কাটবে না। এর পরেই মঙ্গলবার উপাচার্য তাঁর বাসভবন থেকে বেরোতে গেলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দফায় দফায় মারামারি, ধাক্কাধাক্কি এবং তুমুল হট্টগোলে অশান্ত হয়ে উঠেছিল শান্তিনিকেতন। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নিরাপত্তারক্ষাদের ডেকেছিলেন উপাচার্য। তাঁকে ঘেরাওমুক্ত করতে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই সময়ে উপাচার্যের দিকে কয়েক জন আন্দোলনকারী চেয়ার ছুড়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল হলে যান উপাচার্য। কিন্তু সেখানেও ঝামেলা হয়। বার বার ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন পড়ুয়া এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া নিয়ে কোনও লিখিত আবেদন তাঁরা পাননি। তাই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Custodial death : লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তে সিআইডি, ‘CBI-এর শাস্তি চাই’ বলল পরিবার