জরুরি নির্দেশিকা জারি করে দেশের যাবতীয় সমাজমাধ্যম থেকে বিবিসির ‘বিতর্কিত’ তথ্যচিত্র সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেন আইনজীবী এমএল শর্মা। দেশের শীর্ষ আদালতকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন তথ্যচিত্রটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার এই সিদ্ধান্ত ‘স্বেচ্ছাচারপ্রসূত’ এবং ‘অসাংবিধানিক’। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলা গৃহীত হয়েছে। মামলার শুনানি আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি।
একই বিষয়ে আর একটি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক এন রাম এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য এটিকে দ্রুত শুনানির জন্য নির্দিষ্ট মামলার তালিকায় নথিবদ্ধ করার দাবি জানান আইনজীবী শর্মা। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের খবর, আগামী সোমবার মামলাটি শুনবে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এই বেঞ্চে থাকবেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসীমহা এবং বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা।
আরও পড়ুন: Indus Waters Treaty: পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি, সিন্ধু জলচুক্তিতে বদলের দাবিতে নোটিস পাঠাল ভারত
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত সরকার রীতিমতো বেকায়দায়। আর এই মামলার শুনানি এমন সময়ে শুরু হচ্ছে যখন সংসদে চলবে বাজেট অধিবেশন। সরকার সোমবার সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছে। সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, বিরোধী শিবির এদিনের বৈঠকে বিবিসির তৈরি তথ্য চিত্র নিয়ে আলোচনার দাবি জানাবে। সরকার সেই দাবিতে যে সাড়া দেবে না ধরে নেওয়া যেতে পারে। হাতিয়ার করতে পারে সুপ্রিম কোর্টকে। জানাতে পারে, সর্বোচ্চ আদালতে এই বিষয়ে একটি মামলা রুজু হয়েছে। এটা এখন বিচারাধীন । বিচারাধীন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে না।
সর্বদল বৈঠক শেষে এনডিএ শিবির বিকেলে ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হচ্ছে। সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে সরকারের রণকৌশল ঠিক করতেই ডাকা হয়েছে বৈঠক। সরকারকে যে স্বস্তিতে নেই, তা স্পষ্ট।
দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে। ‘ইন্ডিয়া-দি মোদী কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি। যদিও বিবিসি দাবি করেছে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। মোদী সরকারের ওই পদক্ষেপকে বিরোধী দলের নেতারা ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Hindenburg: ‘জাতীয় পতাকার আড়ালে ভারতকে লুটছেন’! আদানির আক্রমণের পালটা হিন্ডেনবার্গের