শুভ শক্তির উপর অশুভ শক্তির জয়– এই হল দোল বা হোলি উৎসবের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা। ফলে, এর সঙ্গে পবিত্রতার একটা সংযোগ থাকেই। তার সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে কিছু করা বা না-করার বিষয়টি। এদিন যেহেতু পবিত্রতার সঙ্গে এই উপলক্ষটি পালন করা হয়, তাই এর সঙ্গে কিছু কিছু নিয়ম জড়িয়ে গিয়েছে। শীতের পরে আসে বসন্ত। বসন্তে আসে রঙ-উৎসব। এই সময়ে প্রকৃতিতে আসে নতুন প্রাণের তরঙ্গ। গাছে গাছে ফুল, ডালে ডালে পাতা। নীল আকাশে ওঠে উজ্জ্বল রোদ।
পঞ্জিকা মতে দোলযাত্রা আর হোলি উৎসবের দিনক্ষণ আলাদা। ২০২৩ দোলপূর্ণিমা ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসবের আবহ। দিকে দিকে যা কিছু ধূসর তাকে রঙে রাঙিয়ে নিতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এরই মাঝে কেউ কেউ পঞ্জিকা মতে দোল পূর্ণিমার শুভ তিথিতেও চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। কারণ বহু গৃহস্থেই দোল পূর্ণিমার দিন থাকে বিশেষ পূজার আয়োজন। দেখে নেওয়া যাক, দোল পূর্ণিমার তিথি কখন থেকে পড়ছে।
বহু বাড়িতেই দোলের দিন শ্রীরাধাগোবিন্দের পুজো হয়। আবার দোলযাত্রার সূচনায় বীরভূমের শান্তিনিকেতনে বসন্তকে উদযাপন করে পালিত হয় বিশেষ বসন্ত উৎসব। দিকে দিকে আবিরের রঙে রাঙা হয় আকাশ বাতাস। এমন দিনে অনেকেই নানান শুভ কাজ করে থাকেন।
দোল মোটামুটি দুতিনদিনের একটি উদযাপন। প্রথম পর্বে হোলিকা দহন, পরের দিন দোলযাত্রা। হোলিকা দহন সাধারণত দোলের আগের দিনে হয়। এবার হোলিকা দহন ৬ মার্চ বিকেলে। হোলিকা দহন বা ছোটি হোলি হল পুরনো বা অশুভের উপর নতুন বা শুভের জয়। এদিন অনেকেই তাদের বাড়ির পুরনো জিনিসপত্র সব আগুনে দেন। শীতের জড়তা কাটিয়ে প্রাণের উজ্জীবনের লগ্ন এই হোলিকা।
দলের দিন যা করবেন
- হোলিকা দহনের দিনে ঘরে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালুন
- ঘুঁটে, তেল, তিল, চিনি, শস্যদানা, নারকোল ইত্যাদি আগুনে অর্পণ করুন
- আগুনকে যখন পরিক্রমা করবেন তখন তাতে জলসিঞ্চন করুন
- হোলিকাদহন শেষে ওই অগ্নিকুণ্ড থেকে ছাই সংগ্রহ করুন
দলের দিন যা করবেন না
- এদিন বাইরের কারও দেওয়া খাবার খাবেন না
- আপনি এদিন কাউকে টাকাকড়ি বা কোনও দামি জিনিসপত্র ধার দেবেন না
- মেয়েরা এদিন চুলে অবশ্যই তেল দেবেন, চুল বেঁধে রাখবেন, কোনও ভাবেই খুলে রাখবেন না
- হলুদ বা কালো রঙের পোশাক পরা এড়িয়ে যান
- হোলিকা দহনের দিনে রাস্তায় ইতস্তত পড়ে থাকা কোনও জিনিসে হাত দেবেন না