Samaresh Majumdar: Bengali author Samaresh Majumdar passes away

Samaresh Majumdar: প্রথম গল্প লিখে পেয়েছিলেন ১৫ টাকা! ফিরে দেখা সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখকের জীবন

সোমবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হলেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। অনিমেষ-মাধবীলতার স্রষ্টার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

১৯৪২ সালে উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায় জন্ম প্রয়াত কথা সাহিত্যিকের। প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জিলা স্কুলে। তাই তো আজীবন উত্তরবঙ্গের প্রতি আলাদাই টান ছিল সমরেশবাবুর। ষাটের দশকের গোড়ায় কলকাতায় এসে স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হন, বাংলায় স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেন।

সালটা ১৯৭৫, দেশ পত্রিকায় ছাপা হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর অবশ্য তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর বলিষ্ঠ কলমে ধরা পড়েছে স্বাধীনতা আমল থেকে শুরু করে হাল আমলের জলছবি- উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ আর মৌষলকাল। যেখানে অনিমেষ মাধবীলতার প্রেম আর তাঁর ছেলে অর্কর জীবনের কঠিন লড়াইয়ের কথা তিনি লিখেছিলেন।

আরও পড়ুন: Surjotamosi Review : চাইনিজ গুপ্তসঙ্ঘ, ফ্রি ম্যাসন, কালোজাদু – রহস্যের ঘনঘটা উনিশ শতকের ‘কলিকাতা’য়

তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র অর্জুন। সমরেশের লেখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘সাতকাহন’, ‘গর্ভধারিণী’, ‘তেরো পার্বণ’, ‘স্বপ্নের বাজার’, ‘উজান’, ‘গঙ্গা’, ‘ভিক্টোরিয়ার বাগান’, ‘আট কুঠুরি নয় দরজা’, ‘অনুরাগ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ লেখক জীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বহু পুরস্কারে ভূষিত হন সমরেশ মজুমদার। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার পান তিনি। চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে পান বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পুরস্কার।

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো সিলেট ভ্রমণ করেছিলেন ‘কালবেলা’র স্রষ্টা। সে সময় ‘বই প্রকাশের গল্প’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে শুনিয়েছিলেন নিজের লেখক হয়ে ওঠার গল্প। অনুষ্ঠানে সমরেশ মজুমদার বলেন, ‘কলকাতার দেশ পত্রিকায় আমার প্রথম একটি গল্প ‘অন্তর আত্মা’ ছাপানোর জন্য দিয়েছিলাম। প্রথমে বলল এক সপ্তাহ পর ছাপা হবে এর পর খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এক মাস পর ছাপা হবে। প্রায় দেড় মাস পর গল্পটি ফেরত দেয় দেশ পত্রিকা। এরপর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে পত্রিকাটির সাহিত্য সম্পাদককে গল্প না ছাপানোর কারণ জানতে চাই। তখন ওরা বললো গল্পটি ছাপাখানায় পাঠানোর বদলে ভুল করে আপনার ঠিকানায় ফেরত গেছে। রেখে যান এক সপ্তাহ পর এটি ছাপা হবে। পরে কথামতো গল্পটি ছাপা হয় এবং ১৫ টাকা মাইনে পাই। এরপর গল্পটি পাঠকমহলে সমাদৃত হলে দেশ পত্রিকা পরে নিয়মিত আমার গল্প ছাপাতে শুরু করে। এভাবেই একজন সমরেশ মজুমদার লেখক হয়ে উঠি।’

আরও পড়ুন: BOOK READING: মিলবে মানসিক শান্তি, আজ থেকেই বই পড়ার অভ্যাস করুন