২০২১ সালের অক্টোবরে মুম্বই উপকূলে এক প্রমোদতরী থেকে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ানকে মাদকাণ্ডে গ্রেফতার করেছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। সেই ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় হয়েছিল। এই ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছিল। সেই সময় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তথা এনসিবির জোনাল হেড ছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে। তাঁর নেতৃত্বেই হয়েছিল প্রমোদতরীতে হানা দিয়েছিল এনসিবি। সেই সমীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা শুরু করেছে সিবিআই। যদিও আরিয়ান খান কাণ্ডের পরই এনসিবি প্রধানকে মুম্বই থেকে রাতারাতি বদলি করে চেন্নাই পাঠানো হয়। যদিও তাতেই তাঁর বিড়ম্বনা কমেছে এমন নয়।
সম্প্রতি সিবিআই তল্লাশি চালায় সমীরের মুম্বইয়ের বাড়িতে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। শোনা যায়, আরিয়ানকে মুক্ত করতে খান পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রাক্তন এই এনসিবি প্রধান। তবে এ বার আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য এল সিবিআইয়ের হাতে। ২৫ কোটি নয়, রফা হয় কত কোটি টাকার বিনিময়ে?
ভিজিল্যান্স রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তদন্তকারীদের প্রাথমিক তদন্তের পর সমীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, সমীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি বৃদ্ধি করতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে মামলা দায়ের করে সিবিআই। সমীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শাহরুখ খানের কাছ থেকেই ২৫ কোটি টাকা ঘুষ চান প্রাক্তন এই এনসিবি প্রধান। আরিয়ানের জামিন ও তাঁর সঙ্গীদের জামিনের জন্য এই বিপুল অর্থের দাবি জানান বলেই অভিযোগ। তবে শেষমেশ রফা হয় ১৮ কোটি টাকায়। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি খান পরিবারের থেকে শেষমেশ কুক্ষিগত করতে পেরেছিলেন কি না, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও এই মামলায় সমীরের দুই সঙ্গী পি কে গোসাভি ও প্রভাকর সাইলির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে গোসাভি ৫০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন খান পরিবারের তরফে পরে অবশ্য সে টাকা ফেরত দেন। অন্য দিকে এই মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন প্রভাকর সাইলি। যিনি মারা গিয়েছেন বছর দুয়েক আগে।
আরিয়ান মামলার ১ নম্বর সাক্ষী প্রভাকর সেলই প্রথম দাবি করেন, ওয়াংখেড়ে এবং গোসাভি মিলে আরিয়ানের পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছে৷ এরপরেই ওয়াঙ্খেড়ের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করে পৃথক তদন্ত শুরু করে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। তার রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করেই এই এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই৷