আফ্রিকা থেকে আনা চিতার ফের মৃত্যু কুনো ন্যাশনাল পার্কে। চার মাসের মধ্যে এই নিয়ে আটটি চিতা মারা গেল মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে। শুক্রবার সকালে চিতাটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সুরজের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার পুরুষ চিতা তেজসের মৃত্যু হয়েছিল। দুই লড়াই লড়াইয়ে মারা যায় তেজস। এমনটাই জানা গিয়েছিল। তারও আগে ২৫ মে দুই চিতা শাবকের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ৯ মে, ২৩ এপ্রিল ও ২৭ মার্চ একটি করে চিতা মারা যায়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে নামিবিয়া থেকে আনা ৮টি চিতা ছেড়ে দেওয়া হয় কুনো জাতীয় উদ্যানে। তাদের মধ্যে ছিল ৫টি স্ত্রী চিতা, ৩টি পুরুষ চিতা। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে ভারত থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া চিতাকে ফিরিয়ে আনার সেটাই ছিল প্রথম প্রয়াস। আবার চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আরও ১২টি চিতাকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়। তাদের মধ্যে ছিল ৭টি পুরুষ ও ৫টি স্ত্রী চিতা।
আর এই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে দেশের প্রজেক্ট চিতাকে। কেন এভাবে মরতে হচ্ছে একের পর এক চিতাকে, সেই নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। চিতা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতার মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ গলায় থাকা ‘স্যাটেলাইট কলার’। তাঁরা মনে করছেন ভারতের মত দেশে আর্দ্র আবহাওয়ায় চিতার গলায় লাগানো ‘স্যাটেলাইট কলার’প্রদাহ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং সেপ্টিসেমিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে চিতাদের। তা থেকেই মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক চিতার।
চিতার গতিবিধি ট্র্যাক করতেই এই ধরণের স্যাটেলাইট কলার লাগানো হয়। মঙ্গলবার মৃত চিতাটির প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে চিতাটির ঘাড়ে উপরিভাগের ক্ষত ছিল। হৃদপিণ্ড, ফুসফুস এবং কিডনি ফেলিওয়ের কারণে মৃত্যু হয়েছে চিতাটির। এবিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান টর্ডিফ বলেছেন, “দুটি চিতার ক্ষত নিশ্চিতভাবেই অন্য কোন প্রাণীর আক্রমণের কারণে ঘটেনি বরং এমন একটি সমস্যার কারণে ঘটেছে যা আমরা আগে থেকেই ভাবিনি। আমরা চিতাদের গলায় যে স্যাটেলাইট কলার লাগিয়েছি তা থেকেই আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে, কলারের নীচে জল জমে এবং ত্বক ক্রমাগত ভিজে থাকছে।সেই থেকেই তৈরি হচ্ছে ক্ষত। এর থেকেই সেপ্টিসেমিয়ায় মারা যাচ্ছে চিতাগুলি, প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে’।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: মেয়ে হল কেন? রাগে দু’দিনের নাতনিকে গলা টিপে খুন দিদিমার