কিছু দিন আগেই ‘ওপেনহাইমার’-এর সঙ্গে ভগবদ্গীতার যোগসূত্রের কথা শোনা গিয়েছিল। এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত এই ছবিতে রবার্ট ওপেনহাইমারকে দেখা গিয়েছে পরমাণু বোমা আবিষ্কারের উৎসাহ ভগবৎ গীতা থেকে পেতে। আর তা নিয়ে উৎসাহী ছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু ছবিটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পালটে গিয়েছে। এখন ছবিটির সঙ্গে ভগবদ্গীতার সংযোগসূত্রটি নিয়ে রেগে আগুন অনেকেই। দাবি উঠেছে এই দৃশ্য ছবি থেকে বাদ দেওয়ার, নতুন ‘বয়কট হলিউড’-এর।
আসলে, এই সিনেমাটি প্রথম পরমাণু বোমা যিনি তৈরি করেছিলেন সেই বৈজ্ঞানিক জে রবার্ট ওপেনহাইমারের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।ছবিতে দেখা গিয়েছে রবার্ট ওপেনহাইমার এবং তাঁর প্রেমিকা জিন ট্যাটলক সঙ্গমরত হয়েছেন। ওপেনহাইমারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিলিয়ান মার্ফি এবং ট্যাটলকের চরিত্রে ফ্লোরেন্স পিউ। এই দৃশ্যের মাঝে দেখা যায়, ট্যাটলক উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যান ওপেনহাইমারের বইয়ের আলমারির দিকে। সেখান থেকে একটি বই বার করে নেন। জানতে চান, এটি কোন ভাষায় লেখা? ওপেনহাইমার বলেন, সংস্কৃত। ট্যাটলক একটি বিশেষ পাতা খুলে জানতে চান, কী লেখা সেখানে। ওপেনহাইমার ব্যাখ্যা করতে গেলে তিনি বারণ করেন। এবং বলেন, লাইন বাই লাইন বলতে। ওপেনহাইমার বলতে থাকেন, “Now I am become Death, the destroyer of worlds.”’। এরই মধ্যে ট্যাটলক বসে পড়েন চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে ওপেনহাইমারের উপর। পুনরায় সঙ্গম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: Ravindra Mahajani : বন্ধ ঘর থেকে পচা গন্ধ! ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার কিংবদন্তী অভিনেতার দেহ
তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি কী করে ফেলেছেন, বা কী বানিয়ে ফেলেছেন। তাই তো তিনি নিজের উদ্দেশে বলেছিলেন ‘আমি মৃত্যুর রূপ। আমি এই পৃথিবীর ধ্বংস হওয়ার কারণ।’ ১৯৪৮ সালের টাইম ম্যাগাজিনের তরফে জানানো হয়েছিল যে রোজ সন্ধ্যায় আত্মতুষ্টির জন্য বা কখনও বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য তিনি ভগবৎ গীতা পাঠ করতেন। একই সঙ্গে তিনি সেই সময় সংস্কৃত শেখেন আর্থার ডাব্লিউ রাইডারের থেকে। এটা তাঁর শেখা অষ্টম ভাষা ছিল। প্রিন্সটনের স্টাডি রুমে গোলাপি মলাটে বাঁধানো একটি গীতা রাখা ছিল।
আর এই দৃশ্যের পরই সিনেমার পরিচালক নোলানের সমালোচনায় সরব হয়েছেন সকলে। এমনকী এই দৃশ্য না সরিয়ে ভারতে মুক্তি করানোর জন্য সেন্সর বোর্ডকেও ট্রোল করেন নেটিজেনরা। অতি স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই দৃশ্য ছবির ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ হতেই পারে, কিন্তু অনেক হিন্দুই মনে করছেন, এটি তাঁদের জন্য অবমাননাকর। অনেকে এমন দাবিও করেছেন, এই দৃশ্যে গীতার যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাও ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: Bollywood: মুকেশ অম্বানিকে জড়িয়ে ধরলেন দীপিকা পাড়ুকোন