মণিপুর প্রশ্নে প্রবল হট্টগোলের মধ্যেই আজ লোকসভায় জন্ম ও মৃত্যু নথিভুক্তকরণ (সংশোধনী), ২০২৩ বিল পেশ করল কেন্দ্র। তবে বিক্ষোভের কারণে আজ বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা করেনি সরকার পক্ষ। বিরোধীদের আশঙ্কা ওই বিলটি পাশ হলে এক দিকে জন্ম-মৃত্যু তথ্য সংরক্ষণের প্রশ্নে রাজ্যের এক্তিয়ারে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ হবে, তেমনই ওই তথ্যভান্ডার জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনপিআর) গঠনে ঘুরপথে সাহায্য করবে সরকারকে।
১৯৬৯ সালের জন্ম-মৃত্যু আইনের সংশোধনী আইন কার্যকর হওয়ার পরে কোনও শিশুর জন্মের রেকর্ড ই-নথিভুক্তকরণ করাটা বাধ্যতামূলক হবে। সেই নথিভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে বাবা ও মায়ের আধার নম্বর দেওয়া জরুরি শর্ত হিসাবে রাখা হয়েছে। সূত্রের মতে, এর ফলে ওই আইন পাশের পরে দেশে জন্মানো সব শিশুর রেকর্ড রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের ঘরেও সংরক্ষিত থাকবে। ভবিষ্যতে জন্মের ওই শংসাপত্র স্কুলে ভর্তি, গাড়ির লাইসেন্স করা, ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি, বিয়ের নথিভুক্তকরণ, সরকারি চাকরি এমনকি পাসপোর্ট বা আধার কার্ড তৈরির ক্ষেত্রেও ব্যবহার হবে। তা ছাড়া এই ব্যবস্থায় ই-শংসাপত্র পাওয়া কোনও শিশুর আঠারো বছর বয়স হলেই তাঁর নাম নিজে থেকে ভোটার তালিকায় উঠে যাবে।
আরও পড়ুন: Manipur: মণিপুর নিয়ে মোদীর বিবৃতি চেয়ে ‘ইন্ডিয়া’র ধর্না, রাজস্থান-বাংলা নিয়ে ধর্নায় বিজেপি
সোমবার রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেনসাস কমিশন অফ ইন্ডিয়ার ‘জনগণ ভবনে’র উদ্বোধন করেন শাহ। সেখানেই নয়া বিলের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। ভোটার তালিকায় জন্ম এবং মৃত্যুর শংসাপত্র সংক্রান্ত তথ্য তুলে রাখার সপক্ষে শাহ বলেন, “ভোটার তালিায় জন্মমৃত্যুর তথ্য উল্লেখ রাখতে সংসদে নয়া বিল আনা হবে। এর আওতায়, ১৮ বছর বয়সে পা দিলে, আপনা আপনিই, সেই নাগরিকের নাম ভোটার তালিকায় উঠে যাবে। একই ভাবে, কেউ মারা গেলে, সেই তথ্যও পৌঁছে যাবে ইলেকশন কমিশনের হাতে। সেই মতো ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে নাম।”
আপাতত জন্ম এবং মৃত্যুর নথিভুক্তকরণের বিষয়টি রাজ্যের হাতে আছে। নথিভুক্তকরণের জন্য স্থানীয় রেজিস্ট্রার নিয়োগ করে রাজ্য। সামগ্রিকভাবে রাজ্যের সেই তথ্যভাণ্ডারের দায়িত্ব থাকে মুখ্য রেজিস্ট্রারের কাঁধে। সেই আইনে সংশোধন ঘটিয়ে কেন্দ্র জাতীয় তথ্যভাণ্ডার করে তুলতে আগ্রহী। এর মাধ্যমে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির পথ আরও প্রশস্ত হবে বলে মত বিজেপি বিরোধী শিবিরের। নতুন আইনে রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রের তথ্যভাণ্ডারে ওই একই তথ্য এখন থেকে সংরক্ষিত হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিরোধী দলগুলি।
আরও পড়ুন: Raghav Chadda: সংসদের ভিতরেই কাকের আক্রমণে নাস্তানাবুদ রাঘব চাড্ডা, কটাক্ষ BJP-র