প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নতুন করে কোনও স্বস্তির খবর দিতে পারল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার বিকেলে উডল্যান্ডস হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে যে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তাঁকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটজনক।
গত কয়েক দিন ধরেই জ্বর ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সিওপিডির সমস্যায় আক্রান্ত। শনিবার সকাল থেকেই ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকেন তিনি। শরীরে কমতে থাকে অক্সিজেনের মাত্রা। তার পরই বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বুদ্ধদেবকে। হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বুদ্ধদেবের শ্বাসনালীতে (লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট) সংক্রমণ রয়েছে এবং ‘টাইপ-২ রেসপিরেটরি ফেলিওর’ হয়েছে।
বুদ্ধদেবের চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। ওই দলে রয়েছেন চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী (মেডিসিন), সৌভিক পাণ্ডা (ক্রিটিক্যাল কেয়ার), সুস্মিতা দেবনাথ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার), সরোজ মণ্ডল (হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ), অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায় (ইন্টারনাল মেডিসিন এবং পালমনোলজি), ধ্রুব ভট্টাচার্য (ইন্টারনাল মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার), আশিস পাত্র (অ্যানাস্থেশিয়া), দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায় (ইনফেকশাস ডিজ়িজ স্পেশালিস্ট), সেমন্তী চক্রবর্তী (এন্ডোক্রিনোলজি), সোমনাথ মাইতি (জেনারেল মেডিসিন), সপ্তর্ষি বসু (ফিজিশিয়ান এবং সুপার)। পরিস্থিতি বুঝে মেডিক্যাল বোর্ডে যে দুই চিকিৎসককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এবং সেমন্তী চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: Doctor’s Death: বিদেশী বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কলকাতার চিকিৎসকের মৃত্যু, খুন নাকি দুর্ঘটনা?
রবিবার বুদ্ধদেবকে দেখে গিয়েছেন হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডল। ইকো কার্ডিয়োগ্রাম করিয়েছেন চিকিৎসক ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার রিপোর্ট ভাল বলে জানিয়ে চিকিৎসক কৌশিক বলেন, ‘‘বুদ্ধদেববাবুর ‘কার্ডিয়াক ফাংশন’ (হৃদ্যন্ত্রের কাজ) বেশ ভাল। তাই ফুসফুসের অবস্থা খারাপ থাকলেও উনি লড়ে যাচ্ছেন। শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে। রাইলস টিউবের মাধ্যমে তাঁকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। কোনও সমস্যা ছাড়াই তাঁর খাদ্যনালী দিয়ে খাবার শরীরে ঢুকছে। এটা ভাল লক্ষণ।’’
রবিবার দুপুরে চিকিৎসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় জানান, বুদ্ধদেববাবুর যে সংক্রমণ আছে, তা নিয়ে সোমবারের আগে পরীক্ষা করে কোনও লাভ নেই। কারণ সবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে অ্যান্টি-বায়োটিক পালটানো হয়েছে। সেটার প্রভাব পড়তে তো কিছুটা সময় লাগবে। এই মুহূর্তে সিটিস্ক্যানও করা হচ্ছে। স্থিতিশীল হওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা থেকে ৩৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বুদ্ধদেববাবুকে নিয়ে এখনও উদ্বেগ আছে।
আরও পড়ুন: Dhakuria Murder: মদের দোকানে বচসা, খাস কলকাতায় প্রকাশ্য কর্মীর হাতে খুন ক্রেতা