গত এক বছরে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়ে অনেকেই গ্রেফতার (Arrested) হয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক শিক্ষাকর্তা জেল খাটছেন। এবার টাকা দিয়ে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ায় গ্রেফতার হলেন চার প্রাথমিক শিক্ষক। ধৃত চারজনই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। তদন্তকারীরা চার্জশিটে জানান, তাপস মণ্ডলের মাধ্যমে এঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। সোমবার ওই চার জন আদালতে হাজির হন।
সিবিআইয়ের চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে নাম ছিল ধৃত ৪ শিক্ষকের। কিন্তু চার্জশিটে কেন সাক্ষী হিসেবে নাম ? প্রশ্ন তোলেন বিচারক। যারপরই চার অযোগ্য শিক্ষক জাহিরউদ্দিন শেখ, সায়গল হোসেন, সিমার হোসেন ও সৌগত মণ্ডল গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বিচারক। ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক। নিয়োগ দুর্নীতিতে এই প্রথম গ্রেফতার করা হল অযোগ্য শিক্ষকদের।
নিয়োগ দুর্নীতির জাল কীভাবে ছড়িয়েছে, কাদের তাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, কীভাবে চলত গোটা চক্র এই সমস্ত তথ্য জানার ক্ষেত্রে অযোগ্য শিক্ষকদের থেকে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে সাক্ষী হিসেবে তাদেরকে দেখানো হয়েছে বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে তীব্র উষ্ণাপ্রকাশ করে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এরা নিজেরা চাকরি ‘কিনতে’ টাকা দিয়েছেন। তাই দুর্নীতির দায়ে এই শিক্ষকরাও সমানভাবে দুষ্ট।
মাস খানেক আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওই চার শিক্ষককে সমন পাঠিয়েছিল আলিপুর নগর দায়রা আদালত। অভিযুক্তেরা হাজিরা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আইনজীবীরা আগাম জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তা খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন এঁদের জামিন দেওয়া হবে? এঁদের জন্য এত কিছু।’’ বিচারক চক্রবর্তীর সংযোজন, ‘‘সিবিআই তো ক্লিনচিট দিয়েই দিয়েছিল। আমি ডেকে এনেছি। পর্যাপ্ত মেটেরিয়ালের (তথ্যপ্রমাণের) ভিত্তিতে ওঁদের ডাকা হয়েছে।’’ তিনি ওই প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘‘আপনাদেরই বলতে হবে যে কেন আপনাদের জামিন দেওয়া হবে।’’ বিচারক এ-ও বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে কেউ নিশ্চয়ই টাকা চাইতে যায়নি। আপনারা টাকা নিয়ে গিয়েছেন।’’
সওয়াল-জবাবে চার জনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ২১ অগস্ট পর্যন্ত তাঁদের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হবে। ওই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: Viral News: স্কুলের অঙ্ক প্রশ্নে ‘শুভেন্দু-নওশাদ’ আঁতাত আঁচ, ভাইরাল প্রশ্নপত্র ঘিরে বিতর্ক