জাতীয় নির্বাচন কমিশনার পদে ‘ইয়েসম্যান’ বসানোর পথে যাতে কোনও বাধার সৃষ্টি না হয় তার জন্য নিয়োগ কমিটিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে রাখছে না মোদি সরকার। আজ বৃহস্পতিবারই রাজ্যসভায় এ সংক্রান্ত (দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদারস কমিশনার (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কন্ডিশন অফ সার্ভিসেস অ্যান্ড টার্ম অফ অফিস) বিল-২০২৩ পেশ হতে চলেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত দেশের শীর্ষ আদালতের সঙ্গে ফের একবার সঙ্ঘাতের রাস্তায় হাঁটল মোদী সরকার।
এই বিলের প্রস্তাব অনুসারে, এখন থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্যানেলের পাঠানো নাম রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করবেন। ইতিমধ্যেই এই বিলের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
আরও পড়ুন: Bomb Hoax : আমার গায়ে বোমা লাগানো আছে, এয়ারপোর্টে বললেন বৃদ্ধা
এই বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট এই প্রসঙ্গে যে রায় দিয়েছিল নতুন এই বিলে সেই রায়কে পুরোপুরি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রসঙ্গিত শীর্ষ আদালতের এক সাংবিধানিক বেঞ্চ ওই রায়ে জানিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং ভারতের প্রধান বিচারপতির প্যানেলের প্রস্তাবিত নামের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি। পাশাপাশি ওই রায়ে জানানো হয়েছিল, সংসদ যতক্ষণ পর্যন্ত না এই বিষয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করছে ততক্ষণ এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশ কার্যত উপেক্ষার পথে হাঁটছে মোদি সরকার। নিয়োগ কমিটি গঠন করা হলেও তাতে প্রধান বিচারপতিকে রাখা হচ্ছে না। তার পরিবর্তে কমিটিতে থাকছেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
এই বিলের পর কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শীর্ষ আদালতের সংঘাত আবারও প্রকাশ্যে এসে পড়লো। বিচারকদের নিয়োগ থেকে শুরু করে দিল্লি পরিষেবা আইনের মতো বিতর্কিত আইনের ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং সুপ্রিম কোর্ট বেশ কয়েকটি ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় প্রশাসন এবং সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মত বিরোধ সামনে এসেছে। নতুন এই বিলে শীর্ষ আদালত কি পদক্ষেপ নেয় এখন সেটাই দেখার।