যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ ধৃতদের ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছিল সেই সব ফোন। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরেন্সিক পরীক্ষায় সেই ফোনগুলির একটিতে হস্টেলের ঘরে টবে গাঁজা চাষের ছবি মিলেছে। গত ৯ অগস্ট হস্টেলে নবাগত এক পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার পর সেই ছবি ফোন থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, মর্মান্তিক ওই ঘটনার পর অভিযুক্তদের কারও ফোন থেকে কোনও ছবি, ভিডিয়ো বা চ্যাট (কারও সঙ্গে কথোপকথন) মোছা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, ধৃত প্রাক্তনী ও সিনিয়ররা ‘জেইউএমএইচ’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেছিল। তাতে বিভিন্ন ধরনের ছবি ও মেসেজের আদানপ্রদান হত। ওই নাবালক ছাত্রটি যাদবপুর মেন হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে পড়ার পর ওই গ্রুপে নিজেদের মধ্যে বহু মেসেজ ও ছবির আদানপ্রদান হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যখন হইচই শুরু হয়, তখন ‘জিবি’ বৈঠক করে সিনিয়র ও প্রাক্তনীরা নির্দেশ দেয়, ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে সব তথ্য ও মেসেজ মুছে দিতে।
সঙ্গে গ্রুপটিও তুলে দিয়ে বলা হয়। হস্টেলের বাসিন্দা এক ছাত্রের মোবাইল আটক করে তা ফরেনসিক পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে এই গ্রুপ ও তার যাবতীয় মেসেজ উদ্ধার করতে শুরু করে পুলিশ। ওই মেসেজ উদ্ধার করতে গিয়েই পুলিশের হাতে আসে কয়েকটি ছবি। তাতেই দেখা যায়, টবে হচ্ছে গাঁজা চাষ।
একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বও জারি রেখেছেন তদন্তকারীরা। বুধবার যাদবপুর থানায় মোট ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের তিন পড়ুয়া রয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছেন মেস কমিটির চার সদস্য এবং হস্টেলের ক্যান্টিনের সাত জন। মঙ্গলবার লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছিল যাদবপুরের মেন হস্টেলের ক্যান্টিনের রাঁধুনিকে। ঘটনার রাতে বা তার আগে মেন হস্টেলে কী হয়েছিল বা হত, তা নিয়ে এর আগে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলেছিলেন ওই রাঁধুনি। জানিয়েছিলেন, হস্টেলে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা। পুলিশ সূত্রে খবর, রাঁধুনির বয়ানে র্যাগিংয়ের প্রমাণ মিলেছে। সেই বয়ানের সত্যতা যাচাইয়ের জন্যই ক্যান্টিনের অন্য কর্মচারীদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে খবর তদন্তকারীদের সূত্রে।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: ফের বাড়ল পুজোর অনুদান, বিদ্যুতের বিলেও বড় ছাড়, বাড়তি প্রাপ্তি সরকারি বিজ্ঞাপন