২৮শে অগাস্ট, প্রত্যেক বছর মেয়ো রোডে গান্ধীর মূর্তি পাদদেশে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়। এবারও TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাবেশের কারণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মেয়ো রোডে জড়ো হন। তাঁদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের ছাত্রজীবন ও রাজনৈতিক উত্থানের গল্প তুলে ধরেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী।
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন লড়াই সংগ্রামের কাহিনী তুলে ধরতে গিয়ে একাধিকবার আক্রান্ত হওয়ার কথাও এদিন সমবেত জনতার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন মমতা। কথার একফাঁকে চোখের সমস্যার কথাও শোনা গিয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের গলায়। মমতা বলেন, ‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আগেও অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমার মাথায় ডান্ডা দিয়ে মারার চেষ্টা করেছে। আমার হাতের হাড় ভেঙে গিয়েছে। ১৯৯৩ সালের ২১শে জুলাই আমাকে কোমরে মেরেছে। মার খেয়ে কোমরে আঘাত লেগেছে। এখনও আমি কোমরে বেল্ট না পরে রাস্তা গিয়ে হাঁটতে পারি না।’
মমতা আরও বলেন, “আমার হাতে একাধিকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ইদানিং আমার চোখে একটু অসুবিধা হচ্ছে। আমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে, কিন্তু সময় পাচ্ছি না। সারা শরীর আমার ভগ্ন। আমি জিন্দা লাশ হয়ে বেঁচে রয়েছি। কিন্তু, জেদ ছিল সিপিএমকে বাংলা থেকে সরাব, আমরা সরিয়েছে। কেউ ভাবতে পারেনি যে বাংলা থেকে সিপিএম বিদায় নেবে, কিন্তু সেটা হয়েছে। একদিন রটে গিয়েছিল আমি মারা গিয়েছিলাম। পার্লামেন্ট ১ দিন স্থগিত পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। তবুও আমি লড়াই করেছি সিপিআইএমকে সরাতে। সরিয়েছি। আজও আমাদের লড়াই দিল্লি থেকে বিজেপিকে সরানোর। আমি চাই এই যুদ্ধে আপনার বাঘ-সিংহের মতো লড়াই করুন। এবার আমরা বিজেপি কে সরাব।”
আরও পড়ুন: JU Student Death: ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ছয়, ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ
মমতা তাঁর ছাত্র জীবনের স্মৃতি তুলে ধরেন ভাষণে। মমতা বলেন, “যদি আমায় জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার গর্ব কোনটা? আমি বলি ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। আমি দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করেছি। ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে আমি দুধের ডিপোতে কাজ করেছি। আমি সেই টাকাটা পোস্টার, ব্যানারের কাজে লাগিয়েছি। ভোর ৪টে তে উঠতাম, আমার প্রতিপক্ষে ছিল ডিএসও,আমাকে টানার চেষ্টা করেছিল। আমি কী করে যাব। আমি কংগ্রেস করতাম। এরকম অনেক ঘটনা আমি চোখের সামনে দেখেছি।
এদিন রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়েও বড় ঘোষণা করেন মমতা। TMCP-র সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কলেজ ইলেকশন আমি করিয়ে দেব। পুজো মিটে যাক তারপরই ভোট হবে। এর জন্য বিল সংশোধন করতে হবে। বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনে আগের বিল সংশোধন করা হবে। তবে আমাকে কথা দিতে যে হবে যে কোনও রকমের প্ররোচনায় আপনার পা দেবেন না। পুলিশকেও বলব, কোনও বহিরাগতদের যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুতে সন্তানের চাকরি পাওয়া বংশগত অধিকার নয় : হাইকোর্ট