রাজ্যের দুই প্রান্তে সোনার নামী বিপণির দুই দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতি। একদিকে পুরুলিয়ার নামো বাজার এলাকার দোকান থেকে ৮ কোটি মূল্যের সোনার গয়না লুট করা হয়েছে। তো অন্যদিকে নদিয়ার রানাঘাটে একই কায়দায় ডাকাতি হয়। সেখানে কত টাকার গয়না খোয়া গিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রানাঘাটে ডাকাতি করতে এসে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় চারজনকে আটকও করা হয়েছে। এক জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরও মিলেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রানাঘাটের গয়নার বিপণিতে সোমবার দুপুরে তেমন ভিড় ছিল না। আচমকাই সেখানে কয়েক জন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। সশস্ত্র প্রহরীদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে শুরু হয় লুট। এক জন কর্মীর মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। তার পর গুলি চালাতে চালাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। ওই সময় পুলিশ বাধা দেয়।ওই সোনার শোরুম সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ক্রেতা সেজে প্রথমে দু’জন পরে মোট ন’জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুট শুরু করে। দুষ্কৃতীদের মুখোশ ছিল না। প্রায় কুড়ি মিনিটের মধ্যে হিরে এবং সোনার প্রায় সমস্ত গয়না লুট করে নিয়ে চলে যায় ওই দল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, তিনটি মোটরবাইকে চেপে পালিয়ে যাওয়ার সময় রানাঘাট থানার পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াই শুরু হয়। এর পর চার জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। উদ্ধার হয় একটি ব্যাগ। তাতে লুট হওয়া গয়নার একাংশ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: Berger Paints: বাংলায় ৬০০ কোটি বিনিয়োগ করবে বার্জার পেন্টস, নয়া কারখানা পানাগড়ে, প্রচুর চাকরি
অন্যদিকে, পুরুলিয়া শহরে নামোপাড়া এলাকায় সোনার বিপণীটি রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে অন্যান্য দিনের তুলনায় দোকানে কম কর্মচারী ছিলেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ক্রেতা সেজে দোকানে ঢোকে দুই দুষ্কৃতী। বিভিন্ন সোনার গয়না দেখছিল তারা। পরে তাদের দলের আরও পাঁচজন সেখানে আসে। এরপর দোকানের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে ক্রেতাদের কাছ থেকে ও দোকান থেকে কয়েক কোটি টাকার সোনার গয়না লুট করে। এমনকী, দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে লক্ষাধিক টাকা নগদ নিয়ে চম্পট দেয় তারা।
জানা গিয়েছে, দোকানের মালিক সৌরভ দাঁ অন্য আরেকটি বিপণীর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েছেন। এদিন দুপুরেই তার উদ্বোধন। সেই উপলক্ষে দোকানের অধিকাংশ কর্মচারী ব্যস্ত। ফলে অন্য়ান্য দিনের তুলনায় এদিন কম সংখ্যক কর্মচারী ছিলেন দোকানে। এদিন যে দোকানে কম কর্মচারী থাকবে, তা কি আগেই জানতে পেরেছিল দুষ্কৃতীরা, সেই সুযোগেই সোনার দোকানটি টার্গেট করা হয় এদিন? দোকানের অভ্যন্তরের কেউ কি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যুক্ত? তাঁরাই কি আগেভাগে খবর পৌঁছে দিয়েছিল? এই সমস্ত প্রশ্ন উত্তর খুঁজছে পুরুলিয়া পুলিশ।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, কোনও নির্দিষ্ট একটি চক্র এই দুটো ডাকাতির পিছনে রয়েছে। তারা একই সংস্থার শোরুমকেই কেন ‘টার্গেট’ করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মনে করা হচ্ছে, দীর্ঘ দিন ধরে ছক কষা হয়েছে ডাকাতির।