সরকারি চাকরিতে ফের বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ। একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে চাকরিতে বেনিয়মের অভিযোগ ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেল পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।
অভিযোগ, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সেখানে বোনের চাকরি করছেন দিদি। কাগজে কলমে বোনের চাকরি করার কথা। কিন্তু সে জায়গায় চাকরি করছিলেন দিদি। সরকারি পরিচয়পত্র অনুসারে বোনের বয়স এখন ৫৯ বছর। আর দিদির বয়স সত্তর ছুঁইছুঁই। মঙ্গলবার ভাতার ব্লক প্রশাসন এই অনিয়ম ধরার পর তুলকালাম শুরু হয়ে যায়।
আজ থেকে ২০ বছর আগে ভাতারের সাহেবগঞ্জ-১ পঞ্চায়েতের নুনাডাঙা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে সহায়িকা পদে নিযুক্ত হন সুজাতা চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সুজাতা চাকরি না করলেও তাঁর নামে দিব্যি চাকরি করে আসছিলেন তারই দিদি সঙ্গীতা ভট্টাচার্য। সঙ্গীতার বয়স বর্তমানে ৭০। আর তাঁর বোন সুজাতার বয়স ৫৯ বছর। ৭০ বছরের ওই বৃদ্ধা বোনের চাকরি করতেন এবং তাঁর বেতনের টাকা তুলে নিতেন। সম্প্রতি একটি কাজে বিডিও অফিস গিয়েছিলেন সঙ্গীতা। সেখানেই ধরা পড়ে এই অনিয়ম। আধিকারিকরা তাঁর কাছে ওই চাকরি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান। উত্তর দিতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সঙ্গীতা। তখনই মহিলাকে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এরপরই শুরু হয়েছে শোরগোল।
ভাতারের বিডিও অরুণকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখন সরকারি কাজকর্মে ‘আপগ্রেডেশন’ চলছে। অনলাইনে নথিভুক্তকরণের সময় সাহেবগঞ্জ-১ অঞ্চলের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের কর্মীর তথ্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এক জনের চাকরি করছেন অন্যজন। তাও আবার দীর্ঘ ২০ বছর ধরে। অভিযুক্ত মহিলাকে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বিষয়টি আরও এক বার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে।’’
ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বাসুদেব যশ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ২০০৪ সালে ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে নিয়োগ করা হয় সুজাতা চট্টোপাধ্যায় নামে এক মহিলাকে। এখনও সরকারি খাতায় তিনিই ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে কাজ করছেন। অথচ তাঁর জায়গায় সকলের চোখকে ফাকি দিয়ে কাজ করে আসছিলেন সঙ্গীতা। এতদিনে প্রশাসনিক তদন্তে ধরা পড়েছে, তাঁর নামে বেতন তুলে যাচ্ছেন শিক্ষিকার দিদি। তদন্ত চলছে। প্রশাসন নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’