১৩ বছর আগে নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল এক মহিলার বিরুদ্ধে। নিম্ন আদালত এবং হাই কোর্টে সাজা দেয় তাঁকে। শনিবার সেই মহিলাকেই বেকসুর খালাস করে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। নিম্ন আদালত এবং ছত্তিশগড় হাই কোর্টের রায় খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানাল, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ছাড়াই সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তকে। গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও মত আদালতের।
ছত্তীসগঢ়ের ওই অভিযুক্তা স্বামী পরিত্যক্তা। অভিযোগ, গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে তিনি সেই সদ্যোজাতকে খুন করেন। নিজের সন্তানকে একটি জলা জায়গায় ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় ১৩ বছর আগে মামলা হয়। ২০১০ সালে ছত্তীসগড় হাই কোর্ট ওই মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (খুন) তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে অভিযুক্তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় হাই কোর্ট। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলা।
সম্প্রতি ওই মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের এজলাসে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরিস্থিতিগত কিছু সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে মামলাটির রায় ঘোষণা হয়েছে। পাশাপাশি, যে আট জন সাক্ষী দিয়েছেন, তাঁদের কারও সঙ্গে ওই মহিলার সম্পর্ক ভাল নয়। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সাক্ষ্যদানের সম্ভাবনা থেকেই যায়। যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেই জয়মঙ্গল সিংহের সঙ্গে বরাবর ওই মহিলার সম্পর্ক খারাপ বলে জানতে পেরেছে আদালত।
মহিলার আইনজীবী আরও দাবি করেন, মক্কেল সন্তানসম্ভবা জানার পরেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। জোরপূর্বক তাঁকে কিছু ওষুধ খাওয়ান হয়েছিল। এর ফলে গর্ভপাত ঘটে যায়। এর পর এক সদ্যোজাতের দেহ উদ্ধারের খবর মিলতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মহিলাকে ফাঁসানো হয়েছিল। শুনানি শেষে নিম্ন আদালত এবং ছত্তিশগড় আদালতের রায়ের সমালোচনা করেন বিচারপতিরা। মহিলাকে বেকসুর খালাসের রায় শোনায় সুপ্রিম কোর্ট।