চলতি বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাত্রাছাড়া হিংসার অভিযোগ তোলে সমস্ত বিরোধী দল। ভোটের বলি হন প্রচুর মানুষ। সরকারি হিসেবে পঞ্চায়েত হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন। একাধিক জায়গায় হামলার শিকার হন ভোটকর্মীরাও। এই অভিযোগ পেয়ে আগেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ ভোটকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছিল। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসার বলি হওয়া নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার ক্যাবিনেট বৈঠকে পঞ্চায়েত হিংসায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের একজনকে হোম গার্ড ভলান্টিয়ার-এর চাকরি দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১৯ জন। তার মধ্যে শুধুমাত্র ভোটের দিনই মোট ১৫ জনের প্রাণহানি হয়। সিপিএম ও বিজেপির ৩ জন করে মোট ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা তৃণমূল কর্মী। মমতার দাবি, ৭১ হাজারের মধ্যে ৩টি বুথে অশান্তি হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও কোচবিহার। পঞ্চায়েত নির্বাচনী আবহে নিহতদের ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার স্বজনহারাদের পরিবারের একজন করে পাবেন চাকরিও। শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের পর গত ১৯ জুলাই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, ‘‘ভোট-হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সকলের পরিবারের জন্য দুঃখিত। আমি সমব্যথী। পুলিশকে ফ্রিহ্যান্ড দিচ্ছি। উপযুক্ত পদক্ষেপ করুন। আমরা দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করছি। ভোট হিংসায় ১৯ জন মৃত। তার মধ্যে ১০-১২ জন আমাদেরই। ভোটের দিন সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে চার জন তৃণমূলের। বাকি তিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থক।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ‘‘সাহায্যের ক্ষেত্রে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি কোনও ভেদাভেদ হবে না। মৃতদের পরিবারকে আমরা দু’লক্ষ টাকা করে দেব৷ হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে৷’’