কৃষ্ণ জন্মভূমি জমি বিতর্কে আরও এক মসজিদ জরিপ করায় সায়। উত্তরপ্রদেশের মথুরার শাহি ইদগা মসজিদ জরিপ করে দেখতে সবুজ সঙ্কেত দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত নিযুক্ত, সর্বদা নজরদারিতে থাকবেন, এমন কমিশনারের তত্ত্বাবধানে জরিপ করায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মথুরায় প্রাচীরা কাটরা স্তূপ এলাকা, যা কিনা কাটরা কেশব দাস নামেও পরিচিত, সেখানে রয়েছে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্স। তার ঠিক পাশেই অবস্থিত শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির দাবি, মসজিদের ওই জমিতে প্রাচীন কেশবদাস মন্দির ছিল, যা আসলে ভগবান কৃষ্ণের জন্মস্থল। মসজিদ খুঁড়লে সেখানে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যেতে পারে বলে দাবি তাদের। (Shahi Idgah Mosque)
এর সপক্ষে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি যে যুক্তি দিয়েছে, তা হল, মসজিদের দেওয়ালে পদ্মের ছবি খোদাই করা রয়েছে। এমন কিছু কারুকার্য রয়েছে, যা ঠিক ‘শেষনাগে’র মতো দেখতে। তাই মন্দির ভেঙেই মসজিদ হয়েছে বলে দৃঢ় বিশ্বাস তাদের।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমীক্ষা পরিচালনার জন্য একজন অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করা হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ ডিসেম্বর। ওইদিনই ঠিক করা হবে, কে হবেন এই অ্যাডভোকেট কমিশনার। তাঁর কাজে সহায়তার জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হতে পারে। এই কমিটির রূপরেখা কী হবে, কারা কারা থাকবেন কমিটিতে, সবই ঠিক করা হবে পরবর্তী শুনানির দিন।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, বিশ্বনাথ মন্দিরের মতোই মথুরার ওই মন্দিরটি ধ্বংস করে, মসজিদ নির্মাণ করেন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। সেই মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনার নেতা বিষ্ণু গুপ্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। মথুরার নিম্ন আদালতে প্রথমে মামলা দায়ের হয়। তার বিরোধিতা করে গতবছর ডিসেম্বরে হাইকোর্টে যায় মুসলিম পক্ষ। সেই মামলাতেই এবার মসজিদের জমি জরিপের নির্দেশ এল।
ওই জায়গাকে ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি’ বলে দাবি করে, ১৩.৩৭ একর জমির পূর্ণ অধিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন বিষ্ণু। এমনিতে ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল বিশেষ আইন অনুযায়ী, ধর্মস্থানের চরিত্র বদলানো নিষিদ্ধ। অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময় দেশের যেখানে যা ছিল, তেমন রেখে দিতে হবে। কোনও পরিবর্তন ঘটানো যাবে না। আদালতও এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। মুসলিম পক্ষ বিষয়টি আদালেত তুলে ধরলেও, ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি’ মামলা আদালতে গৃহীত হয়।
এর আগে, ১৯৬৮ সালে শ্রী কৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সংস্থান এবং শাহি মসজিদ ইদগাহ ট্রাস্টের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার আওতায় কৃষ্ণ জন্মভূমির জন্য ১০.৯ একর জমি দিয়ে দেওয়া হয়। ২.৫ একর জমি রাখা হয় মসজিদের জন্য। এই কৃষ্ণ জন্মভূমি জমি বিতর্ক নিয়ে হাইকোর্টে মোট ১৮টি মামলা ঝুলছে।