মা হওয়ার অদম্য ইচ্ছে আর অধ্যবসায়ের কাছে হার মানল শরীরও। মেনোপজের ঠিক আগে শরীরের বাধানিষেধও হার মানল। জিতে গেল আইভিএফ (ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন)। মৃত স্বামীর শুক্রাণু ব্যবহার করেই ৪৮ বছর বয়সে মা হলেন বীরভূমের মুরারইয়ের বাসিন্দা সঙ্গীতা কেশরি।
বছর দুই আগে কোভিডে (COVID-19) মৃত্যু হয়েছিল মুরারইয়ের এই মহিলার স্বামীর। একটিমাত্র মুদির দোকান ছিল তাঁর। জানা গিয়েছে, দাম্পত্য জীবনে সন্তান গ্রহণের জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল। তখন তাঁরা আইভিএফ পদ্ধতির আশ্রয় নেন। আর সেই কারণেই স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এখন, স্বামীর অবর্তমানে সেই সংরক্ষিত শুক্রাণুই মহিলাকে দিল মাতৃত্বের স্বাদ।
স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ (Reserve) করা হলেও আইনের সাহায্য নিয়ে তবেই তা ব্যবহার করতে সক্ষম হন মহিলা। পাশাপাশি এই বয়সে মা হওয়াও সহজ ছিল না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ৪৮ বছর বয়সে তিনি মা হয়েছেন। তাঁর অদম্য ইচ্ছাই জীবনে এমন মোড় ঘোরানো অধ্যায় সূচনা করেছে।
১১ ডিসেম্বর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফুটফুটে ছেলের জন্ম দিয়েছেন তিনি। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিসিইউতে রাখা হয় তাঁকে। সঙ্গীতার চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছেন দু’জন অ্যানাস্থেটিস্ট, এক জন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ এবং এক জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
সঙ্গীতার আইনজীবী অনিন্দ্যকান্তি সিং বলেছেন, ‘‘স্বামী বেঁচে থাকাকালীন ওই মহিলার সন্তান ধারণ নিয়ে সমস্যা ছিল। দীর্ঘদিন আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান লাভের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তাঁরা। তখনই কলকাতার একটি ল্যাবরেটরিতে স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে কোভিডে সঙ্গীতার স্বামী মারা যান। তাই সন্তান চেয়ে মৃত স্বামীর শুক্রাণুকেই ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।’’