ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সঞ্জয় সিং। তিনি অভিযুক্ত কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের ঘনিষ্ঠ। প্রতিবাদে কুস্তি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সাক্ষী মালিক। সেই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগির।
দিল্লিতে ‘প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া’য় সাংবাদিক বৈঠক করে সাক্ষী জানালেন, “আমরা ৪০ দিন রাস্তায় পড়ে ছিলাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আমাদের সমর্থন করেছেন। ব্রিজভূষণ সিংহের ঘনিষ্ঠ জাতীয় কুস্তিগীর সংস্থার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। আমি আজ থেকেই কুস্তি লড়া ছেড়ে দিলাম।” নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি দেশের জন্য অনেক পদক জিতেছি। আপনারা আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
জাতীয় কুস্তিগীর সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন সাক্ষী মালিকেরা। দিল্লিত একমাসেরও বেশি সময় অবস্থান বিক্ষোভও করেন তাঁরা। সাক্ষী মালিকদের দাবি ছিল, জাতীয় কুস্তিগীর সংস্থার মাথায় একজন মহিলাকে আনা হোক। সেই মতো কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদকজয়ী কুস্তিগীর অনীতা প্রতিদ্বন্দিতাও করেন। কিন্তু ভোটাভুটিতে জিতে যান ব্রিজভূষণের ব্যবসায়িক সহযোগী। তার প্রতিবাদেই ‘অবসর’ ঘোষণা করলেন সাক্ষী।
অন্যদিকে, শুক্রবার পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দিলেন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী কুস্তিগির বজরং পুনিয়া।
বজরং সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন যে, তিনি পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বজরং তাঁর বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লিখেছেন, “আমি আমার পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি। আপনি নিশ্চয়ই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত, তবুও আপনাকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ দেশের কুস্তিগিরদের সঙ্গে এমন অনেক কিছু ঘটছে যার প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি।”
বজরং তাঁর চিঠিতে এই বছর জানুয়ারি থেকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ তাঁরা শুরু করেছিলেন, সেটার উল্লেখ করেছেন। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহের অভিযোগ ছিল কুস্তিগিরদের। দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে ধর্না দিয়েছিলেন বজরংরা। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবাদ বন্ধ করেছিলাম, কারণ সরকার আমাদের কথা দিয়েছিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তিন মাস কেটে গেলেও এফআইআর হয়নি। আমরা আবার প্রতিবাদ শুরু করি। কিন্তু জানুয়ারিতে ১৯টি অভিযোগ থাকলেও তা কমে আসে সাতে। এটা প্রমাণ করে যে ব্রিজভূষণ কতটা প্রভাবশালী। ১২ জন কুস্তিগির প্রতিবাদ করা বন্ধ করে দেন।”
मैं अपना पद्मश्री पुरस्कार प्रधानमंत्री जी को वापस लौटा रहा हूँ. कहने के लिए बस मेरा यह पत्र है. यही मेरी स्टेटमेंट है। 🙏🏽 pic.twitter.com/PYfA9KhUg9
— Bajrang Punia 🇮🇳 (@BajrangPunia) December 22, 2023
নির্বাচনে সঞ্জয় জিতে আসায় বলাই যায় যে, বজরং পুনিয়াদের লড়াই কোনও দাম পেল না। তাঁরা ব্রিজভূষণকে সরানোর জন্য লড়াই করছিলেন। ধর্না দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রিজভূষণ সরলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই কুস্তি সংস্থার দায়িত্বে রইলেন। না থেকেও রয়ে গেলেন ব্রিজভূষণ। এর আগে সঞ্জয় উত্তরপ্রদেশ কুস্তি সংস্থার সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি ৪০টি ভোট পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে মাত্র সাতটি।