লোকসভা নির্বাচনের আগে সারি ও সারনাকে আলাদা ধর্মীয় জনজাতিগোষ্ঠী হিসাবে স্বীকৃতি দিতে বড় আন্দোলনের ডাক দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, আদিবাসী এবং মাহাতো গোষ্ঠীর মধ্যে ‘ঝগড়া না লাগানোর আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর। পুরুলিয়া জেলায় সরকারি অনুষ্ঠান থেকে তাঁর বার্তা, বাংলায় কতজন মাহাতো রয়েছেন, তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার আলাদা করে সমীক্ষা চালাচ্ছে।
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম সহ মূলত জঙ্গলমহল ঘেঁষা জেলার একাধিক কুড়মি সমাজের বসবাস। এই সমাজের বেশির ভাগ মানুষের পদবী মাহাতো। পুরুলিয়া জেলার প্রায় ২৪ শতাংশ মানুষ এই সমাজের অন্তর্ভুক্ত বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর। কুড়মিদের দাবি,তাঁদের তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে হবে। এজন্য সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউট)-এর রিপোর্টে প্রয়োজনীয় অনুমোদন প্রয়োজন। এই নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তাঁরা।
তাঁদের সেই দাবিকে মান্যতা নিয়ে রাজ্যে ভৌগোলিক ভাবে তাঁদের সংখ্যা জানতে একটি সমীক্ষা করার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার শিমুলিয়া ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানেই মাহাতোদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সমীক্ষা করার কথা জানান মমতা। তবে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মাহাতোদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। তা রয়েছে কেন্দ্রের হাতেই। বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মমতার এই পদক্ষেপের সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জাত গণনার সঙ্গে মিল পাচ্ছেন।
কিছুদিন আগেই এই সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পুরুলিয়ার সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আদিবাসী এবং মাহাতোদের মধ্যে ঝগড়া আমি লাগাতে চাই না।… মাহাতোদের দীর্ঘদিনের দাবি আছে, তাঁদের আদিবাসী জনজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হোক। এটা আমার হাতে নেই। তাই আমাকে দোষ দেবেন না।’
কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ মূলত, পাহাড়, গাছ, মাটি,জল, জঙ্গলের উপাসক। । এ রাজ্যের কমবেশি ৩০ টি বিধানসভা আসন ও ৪ টি লোকসভা আসনে কুড়মি ভোট নির্ণায়ক এর ভূমিকা নেয়। যদিও, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের শাসক দল এবং কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে সম দূরত্ব বজায় রেখে চলে এই সমাজ। তবে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সমাজকে কাছে পেতেই তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।