আইনের দরবার ছেড়ে এবার রাজনীতির ময়দানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গেরুয়া শিবিরের পতাকা তুলে নিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। যোগ দিলেন বিজেপিতে (Abhijit Ganguly joins BJP)। লোকসভা ভোটে কোন আসন থেকে তিনি লড়াই করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে, তমলুক থেকে লড়াই করবেন প্রাক্তন বিচারপতি।
এদিন সকালে অভিজিতের বাড়িতে পৌঁছে যান বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ও কাউন্সিলর সজল ঘোষ। তার পরই সল্টলেকের বিজেপি সদর দপ্তরে পৌঁছন প্রাক্তন বিচারপতি। সল্টলেকে গাড়ি থেকে নামার পরই তাঁর উপর পুষ্পবৃষ্টি করা হয়। রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে উলুধ্বনি ও শঙ্খ বাজান বিজেপির মহিলা কর্মীরা। এর পর রীতিমতো ‘পদযাত্রা’ করে রাজ্য সদর দপ্তরে ঢোকেন অভিজিৎ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদাররা। ছিলেন সদ্য কংগ্রেসত্যাগী কৌস্তভ বাগচীও।
যোগদানের পর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) বলেন, “আজ থেকে একেবারে নতুন জগতে পা রাখলাম। দলের শৃঙ্খলবদ্ধ সৈনিক হিসেবে কাজ করতে চাই। যে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা পালন করব।” কিন্তু প্রথম দিনেই বিজেপির তরফে অভিজিৎকে ‘কথা কম’ বার্তা দিয়ে দেওয়া হল! তাঁর পাশে বসে প্রকাশ্যেই সেই বার্তা দিলেন স্বয়ং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
অভিজিৎ বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিয়ে প্রথাগত সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘ভয়ঙ্কর’ লড়াইয়ের কথা বলেন। কিন্তু তার পরে সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করতে গেলে অভিজিতের ডান পাশে বসা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কোনও প্রশ্ন নেবেন না!’’ দেখা যায় বাধ্য সৈনিকের মতো অভিজিৎও সে কথা বলছেন। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন (মঙ্গলবার) তো দীর্ঘ সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) এইটুকুই থাক। এর বেশি কিছু বলছি না।’’ তার পরে আর তাঁকে প্রশ্ন করা যায়নি। পদ্মশিবিরের নেতাদের বক্তব্য, ইঙ্গিতে অভিজিৎকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, দল কী চায়।
বিজেপির রীতি অনুযায়ী মুখপাত্র ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কেউ কথা বলতে পারেন না। বিরোধী দলনেতা পরিষদীয় বিষয়ে কথা বলতে পারেন। রাজ্য সভাপতির সার্বিক সব বিষয়ে কথা বলার এক্তিয়ার রয়েছে। তা ছাড়া সাংসদ, বিধায়ক বা বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রার্থী তাঁদের এলাকার বিষয়ে কথা বলতে পারেন। তার বাইরের কিছু নিয়ে নয়। তা-ও বলার আগে দলের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হয়। পদ্মশিবির সূত্রের খবর, অভিজিৎকে এখন সে সবের ‘প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হবে।