২০১৯, পাঁচ বছর আগে বিষ্ণুপুর লোকসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ। আইনি জটিলতায় সেবার তিনি বাঁকুড়ায় প্রবেশ করতে পারেননি। সৌমিত্রর হয়ে বিষ্ণুপুরজুড়ে প্রচার সেরেছিলেন তাঁর তৎকালীন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। স্ত্রী ভাগ্যেই সেবার সৌমিত্র লোকসভায় পৌঁছতে পেরেছিলেন বলে চর্চা হয়। খোদ প্রধানমন্ত্রী সুজাতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন। তারপর পাঁচ বছরে অনেক ঘটনা ঘটেছে। সৌমিত্র-সুজাতা এখন ভিন্ন দলে। ছিন্ন হয়েছে সম্পর্কের বন্ধনও। কালের নিয়মেই এবার সৌমিত্র ও সুজানা সম্মুখ সমরে। লড়াইয়ের ময়দান অবশ্য সেই বিষ্ণুপুরই। বিজেপি ২০২৪ সালের লোকসভায় বিষ্ণুপুর থেকে প্রার্থী করেছে সৌমিত্র খাঁকে। রবিবার ব্রিগেডে বাংলার ৪২ লোকসভা আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল। বিষ্ণুপুরে এবার জোড়া-ফুলের প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল।
রাজনীতির ময়দামে সুজাতার প্রথম পরিচিতি বলতে সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী হিসেবেই। যদিও পরবর্তী সময়ে মাটি কামড়ে পরে থেকে অদম্য লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন সুজাতা। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে এই সুজাতাই তাঁর স্বামীর হয়ে প্রচার করেছিলেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছিলেন। এবারও চাইবেন। তবে এবার আর সৌমিত্রর জন্য নয়, নিজের জন্য।
একুশের বিধানসভা ভোটের মুখে বিজেপি ছেড়ে, সৌমিত্রর সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। ঘাসফুল শিবির থেকে তাঁকে প্রার্থীও করা হয়েছিল। আরামবাগ থেকে। তবে সেবার জয়ী হতে পারেননি সুজাতা। তারপর পঞ্চায়েত ভোটে আবার তৃণমূল ভরসা রাখে সুজাতার উপর। এবার দলের ভরসার মান রাখেন সুজাতাও। ‘খাঁ’ পদবির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে না চাওয়া সুজাতা মণ্ডল এখন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। গত কয়েক বছরে রাজনীতির ময়দানে আরও কিছুটা পরিপক্কতাও পেয়েছেন সুজাতা। এখন সুযোগ পেলেই সাবলীলভাবে সৌমিত্রকে নিশানা করতে ছাড়েন না তিনি। এখন দেখার ভোট ময়দানে সৌমিত্রকে কতটা টক্কর দিতে পারেন সুজাতা।
নাম ঘোষণার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্রেগেডের ব়্যাম্পে হেঁটেছেন। সুজাতার কথায়, ‘আমার নেতৃত্ব জানে বিষ্ণুপুরে আমি ২৪ ঘন্টা ৩৬৫ দিন এলাকায় থাকব। এর আগে জেলা পরিষদের ভোটে মানুষ আমাকে আর্শীবাদ করেছেন। আমার বিশ্বাস বিষ্ণুপুর লোকসভার মানুষও আমার প্রতি ভরসা রাখবেন, আশীর্বাদ করবেন।’
পাল্টা মুখ খুলেছেন বিষ্ণুপুর লোকসভা বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁও। বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে তৃণমূল রাজনৈতিক কোনও ব্যক্তিকে প্রার্থী করতে পারল না। কারণ জানে ওরা হারবে।এবারও বিষ্ণুপুরে পদ্ম ফুল ফুটবে।’