ভোটের আবহে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হুগলির পাণ্ডুয়ার তিন্না নেতাজি পল্লি কলোনীতে বোমা ফেটে মৃত্যু হল এক কিশোরের। গুরুতর জখম হয়েছে আরও দুই কিশোর। ঘটনার পরেই জখম তিন কিশোরকে পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হুগলি গ্রামীন পুলিশ। সিআইডির বম্ব স্কোয়াড ঘটনাস্থলে আসে তদন্তে। আরও দুটি বোমা উদ্ধার করে তারা।
ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে নেতাজি পল্লীতে বোমা রাখা হয়েছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। সেই বোমাকে বল ভেবে খেলতে যায় তিন কিশোর। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় একজনের। আহত কিশোর রূপমের বাবা শুকদেব বল্লভের অভিযোগ, তাঁকে এবং রূপম কেই টার্গেট করতে চেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী রীতা। তবে শেষমেশ ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়।
হুগলির পাণ্ডুয়ার(Pandua) তিন্না নেতাজি কলোনির আদি বাসিন্দা সুখদেব বল্লব। বেশ কয়েক বছর আগে রীতা বল্লবের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র সন্তান রূপম। সুখদেবের দাবি, এলাকারই যুবক দেবা সরকারের সঙ্গে সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রীতা। তা নিয়ে দাম্পত্য অশান্তিও কম হয়নি। সুখদেবের থেকে ডিভোর্স চান রীতা। বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। এলাকাতেই দেবার সঙ্গে নতুন সংসার পেতেছেন রীতা। ছেলে রূপম থাকে সুখদেবের সঙ্গেই। দেবা বর্তমানে বিহারে রয়েছেন। সেই সুযোগে গত শুক্রবার ছেলের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় রীতাকে। আর তার ঠিক দুদিন কাটতে না কাটতেই বোমা বিস্ফোরণ।
রূপমের বাবার দাবি, রীতার নতুন সম্পর্কের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কিশোর সন্তান। তাকে নিয়েই হয়তো দেবার সঙ্গে অশান্তিও চলছিল। তাঁর অনুমান, হয়তো আর সে কারণেই দেবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বোমা বিস্ফোরণের ছক কষেন। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের কাছে রূপমের বাবা এবং ঠাকুমা একথা জানান। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রূপমের মা রীতাকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
২০ মে পঞ্চম দফায় ভোট হুগলিতে। তার আগে বোমা ফেটে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় গোটা জেলাজুড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভোটের দিন সন্ত্রাস করতেই জায়গায় জায়গায় বোমা মজুত করছে তৃণমূল। আর অজান্তেই তার বলি হল নিরীহ কিশোর। মানুষ নিশ্চই ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবে।” শাসকদলের পাল্টা দাবি, ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। তারই জেরে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
এই রাজনৈতিক চাপানউতোর চলাকালীনই এই ঘটনায় জখম ছাত্রের মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাও আবার ওই কিশোরের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে। তারপরেই এই ঘটনার তদন্ত নতুন মোড় নেয়।