৩১ মার্চ উত্তরবঙ্গ থেকে সফর শুরু করেছিলেন। ১৭ মে। টানা ৪৮ দিন। উত্তর থেকে দক্ষিণ, রোদ-জলের মাঝে এলাকার পর এলাকায় প্রচারে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পায়ের চপ্পল আর সেই ধকল নিতে পারল না! শুক্রবার ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে দলীয় প্রার্থী কালীপদ সোরেনের নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করছিলেন মমতা। বক্তৃতার শেষ লগ্নে আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর চপ্পলের ফিতে ছিঁড়ে যায়।
স্বগোক্তির সুরে মমতাকে বলতে শোনা যায়, “যাহ! ছিঁড়ে গেল!” মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্যদের উদ্দেশে তিনি বলে ওঠেন, ‘‘ছিঁড়েই তো গিয়েছে। আমি কি খালি পায়ে যাব এখন?’’ তৎক্ষণাৎ অন্য এক জন নিজের জুতো খুলে মমতাকে দিতে চান। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘না, ওই জুতো আমি পরি না।’’ এর পরেই মঞ্চে মমতার কাছে গিয়ে তাঁর দেহরক্ষী নতুন জুতো নিয়ে আসার কথা জানান। মমতা তাঁকেও ‘না’ করে দেন। বলেন, ‘‘না, এখন কিছু নিয়ে আসতে হবে না। এখানে পাবে না। কোথা থেকে নিয়ে আসবে?’’
নির্লিপ্ত কণ্ঠে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “চপ্পলের আর কী দোষ! যা আয়ু তার থেকে বেশি হেঁটে ফেলেছে!”যদিও পরক্ষণেই সকলকে থামিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সফর সঙ্গী রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীলকে গানের জন্য তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “ইন্দ্রনীল তুমি সেট তৈরি করো। আমি বরং চপ্পলে সেফটিপিন লাগাই!”
উল্লেখ্য, সাদা শাড়ি এবং সাদা হাওয়াই চপ্পল পরেই সর্বত্র ঘোরেন মমতা। সেটাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেনা সাজ।চপ্পলের ফিতে ছিঁড়ে গেলে যে কারও হাঁটাচলা করা সমস্যার। তবে মমতা যেভাবে সেফটিপিন লাগিয়ে পরের সভার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন, তাতে সভাস্থলে অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘এই জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার থেকে আলাদা। সাধারণ হয়েও অসাধারণ।’