সদ্য শেষ হয়েছে সাত দফার লোকসভা নির্বাচন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এবার সেই ইভিএম নিয়েই প্রশ্ন তুললেন টেসলা সিইও ইলন মাস্ক। ইভিএম বাতিলের দাবি তুলেছেন তিনি। যার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট এক্সের কর্ণধার।
ইলন মাস্কের মতে, ইভিএম হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। মানুষ অথবা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করে ইভিএমের হিসেব গুলিয়ে দেওয়া সম্ভব। মাস্কের সেই দাবিকে সমর্থন করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। অন্যদিকে, মাস্কের সেই দাবির বিরোধিতা করে কড়া বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন আইটি মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজীব চন্দ্রশেখর। সংশ্লিষ্ট পোস্টের জবাবে মাস্ককে ‘ভারতের থেকে শিক্ষা নেওয়ার’ কথা বলেন তিনি।
আসলে সম্প্রতি পুয়ের্তো রিকোর নির্বাচনে ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইভিএম হ্যাক, ভুয়ো ভোটারদের ভোটদানের বহু প্রমাণও নাকি জনসমক্ষে মিলেছে।সংবাদ সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে দেশে ইভিএমের মাধ্যমে হওয়া ভোটে একশোর বেশি কারচুপি ধরা পড়েছে। পরে নাকি ব্যালটে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে সেই অনিয়ম সংশোধন করা হয়। আর এই ঘটনাটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক্সে পোস্ট করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র।
সেই প্রসঙ্গ তুলেই টেসলা কর্তা মাস্ক (Elon Musk) নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্সে লিখলেন, “আমাদের দ্রুত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বাতিল করা উচিত। কারণ মানুষ বা এআইয়ের মাধ্যমে ইভিএম হ্যাক করার সম্ভাবনা থেকেই যায়। সেই সম্ভাবনা ক্ষুদ্র হলেও সেটার প্রভাব বিরাট।” কেনেডির সেই পোস্ট শেয়ার করেই ওই মন্তব্য করেন মাস্ক। কিন্তু মাস্কের ইভিএম-বিরোধী পোস্টের বিরোধিতা করে পাল্টা টুইট করেন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন ইলেকট্রনিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তাঁর বক্তব্য, মাস্ক সরলীকৃত ধারণার উপরে ভিত্তি করে বক্তব্য রেখেছেন। চন্দ্রশেখরের কথায়, “একটা সরলীকৃত ধারণা রয়েছে যে, কেউ সুরক্ষিত ডিজিটাল হার্ডঅয়্যার বানাতে পারবে না। ভুল। আমেরিকা কিংবা অন্য জায়গায় যে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রিত ভোটিং মেশিনে সাধারণ যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়, সেখানে মাস্কের ওই বক্তব্য প্রযোজ্য হতে পারে।” মাস্কের টুইটটি শেয়ার করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, ব্লু টুথ, ইন্টারনেট, ওয়াইফাই কোনও কিছু দিয়েই ইভিএমকে হ্যাক করা যায় না। চন্দ্রশেখরের টুইটের নীচে মাস্কের মন্তব্য, “যে কোনও কিছুই হ্যাক করা যেতে পারে।”
রবিবার মাস্কের পোস্টের পরেই এই নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন রাহুল গান্ধী। তিনি লেখেন, “ইভিএম ভারতের ব্ল্যাক বক্স। কেউ সেটিকে পরীক্ষা করে দেখতে পারে না। আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উঠেছে।” মুম্বই উত্তর-পশ্চিম লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী বিজেপির রবীন্দ্র ওয়েইকরের শ্যালক মঙ্গেশ পান্ডিলকরের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে ফোন নিয়ে গণনাকেন্দ্রে ঢোকার অভিযোগ রয়েছে। তা-ও যে সে ফোন নয়! অভিযোগ, ইভিএমকে ‘আনলক’ করার জন্য যে ওটিপি লাগে, তা তৈরি করতে পারে এমন ফোন নিয়ে ঢুকেছিলেন মঙ্গেশ। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। রাহুল অবশ্য নিজের টুইটে এই সংক্রান্ত খবরের একটি অংশ পোস্ট করেছেন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দল এসপি-র প্রধান অখিলেশ যাদব বিতর্কে মুখ খুলে বলেছেন, “আমরা আবারও আমাদের পুরনো দাবিটা প্রকাশ্যে আনছি। তা হল ভবিষ্যতের সমস্ত নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে করতে হবে।”
EVMs in India are a “black box,” and nobody is allowed to scrutinize them.
Serious concerns are being raised about transparency in our electoral process.
Democracy ends up becoming a sham and prone to fraud when institutions lack accountability. https://t.co/nysn5S8DCF pic.twitter.com/7sdTWJXOAb
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) June 16, 2024