আপ সমর্থকদের আনন্দ বদলে গেল বিষাদে। বৃহস্পতিবারই নিম্ন আদালত জামিন দিয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে (Arvind Kejriwal)। কিন্তু শুক্রবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুক্তি আটকাতে তৎপর ইডি দ্বারস্থ হয়েছিল দিল্লি হাই কোর্টের। এবার নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল উচ্চ আদালত। ইডির আর্জি, বাতিল করা হোক নিম্ন আদালতের নির্দেশ। সেই আর্জির শুনানি না হওয়া পর্যন্ত কেজরির জামিনে স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্ট। পরবর্তী শুনানি ২৫ জুন।
বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত কেজরির স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছিল ওই মামলার তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ইডির আবেদন মেনে স্থগিতাদেশ না দিয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দুই বিচারপতির অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়েছিল, হাই কোর্টে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তিহাড় জেলে বন্দি কেজরী মুক্তি পাবেন না। শুক্রবার দুপুরেই শুরু হয় জরুরি ভিত্তিতে শুনানি।
গোড়াতেই ইডির আইনজীবী তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল রাজু জানান, ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ইডির তরফে জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলির যথাযথ ভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। তাঁর অভিযোগ, সেই নথিগুলি পর্যালোচনা না করেই একতরফা ভাবে জামিন দেওয়া হয়েছে আপ প্রধানকে। অন্য দিকে, কেজরির আইনজীবী দাবি করেন, তদন্তকারী সংস্থা তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে কেজরিওয়ালকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল ইডি (ED)। সপ্তাহদুয়েক পরে তাঁকে পাঠানো হয় তিহাড় জেলে। ইডির গ্রেপ্তারির বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। পরে সুপ্রিম নির্দেশে ২১ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তিনি। জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন শুনতেই রাজি হয়নি। গত ১০ মে কেজরিকে ২১ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়। অর্থাৎ ১ জুন নির্বাচনের ফল বেরনোর দিন অবধি অন্তর্বর্তী জামিন দেয় শীর্ষ আদালত। ২ জুন আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন আপ সুপ্রিমো।
বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির প্রধানের স্থায়ী জামিনের মঞ্জুর হয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। কেজরির স্ত্রী সুনীতা শুক্রবার অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত জামিন মঞ্জুর করার পরে সেই রায় ওয়েবসাইটে আপলোড হওয়ার আগেই দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ইডি। প্রসঙ্গত, ইডির তরফে বৃহস্পতিবার কেজরির জামিন ৪৮ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি। বিচারক ন্যায় বিন্দু ১ লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সুনীতা শুক্রবার বলেন, ‘‘দেশে স্বৈরতন্ত্র সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে।’’