জেল মুক্তির পর ফের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে চলেছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) প্রধান হেমন্ত সোরেন। জানা যাচ্ছে, জেএমএম, কংগ্রেস এবং আরজেডির বিধায়ক দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ফের তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর হবে। এদিকে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেনকে দেওয়া হবে দলের সভাপতি পদ। বর্তমানে যে পদে রয়েছেন খোদ হেমন্ত।
সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্ডিয়া জোটের বিধায়কদের বৈঠকে চম্পাইকে সরিয়ে প্রাক্তনকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তাতে একেবারেই খুশি হননি বর্ষীয়ান নেতা। ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, চম্পাই খুবই দুঃখ পেয়েছেন। জেএমএমের বিধান পরিষদীয় দলের বৈঠকে তিনি ‘অপমানিত’ বোধ করছেন। তাই দেরি না করে এদিনই সন্ধ্যায় তিনি রাজভবনে গিয়ে পদত্যাগ করবেন বলে জানা গিয়েছে।
জমি দুর্নীতি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ইস্তফা দেন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকেও। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে শুরু হয় ডামাডোল। কংগ্রেস, আরজেডি ও অন্যান্য জোটসঙ্গীদের সম্মতিতে চম্পাই সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। হেমন্তের ইস্তফার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন চম্পাই। তবে হেমন্তের জেলমুক্তির পর ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে একাধিক রদবদল নজরে এসেছে। ধীরে ধীরে সরকারি কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেছেন চম্পাই। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাজ্যে ১৫০০ শিক্ষকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সরকারি অনুষ্ঠান কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর আরও একাধিক কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। যা থেকে সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী পদে রদবদলের।
উল্লেখ্য, আর কয়েক মাস পরেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন আছে। সেই ভোটে হেমন্ত সোরেনকেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে এগতে চায় ইন্ডিয়া জোট। কিন্তু, একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত বিজেপির হাতে অতিরিক্ত অস্ত্র তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বিরোধী দল বিজেপি এই ইস্যুতে দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং পরিবারবাদী রাজনীতির হাতিয়ারে শান দিতে শুরু করবে। এদিনই আক্রমণের প্রথম ধাপ হিসেবে বিজেপির এক এমপি নিশিকান্ত দুবে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ঝাড়খণ্ডে চম্পাই সোরেনের জমানা খতম।
জেএমএমকে নিশানা করে তিনি আরও লিখেছেন, পরিবারকেন্দ্রিক দলে পরিবারের বাইরে কারও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই। প্রসঙ্গত, ৬৭ বছর বয়সি চম্পাই শুধুমাত্র জেএমএমের অভিজ্ঞ নেতাই নন, দল প্রতিষ্ঠার সময় তিনিই ছিলেন গুরুজি শিবু সোরেনের ছায়াসঙ্গী। এমনকী জানুয়ারিতে যখন হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হন, তখন রাতারাতি একটি প্রায় ভেঙে পড়া সরকারের শক্ত হাতে হাল ধরেন তিনি।