প্রয়াত ইব্রাহিম রইসির উত্তরসূরি হিসাবে সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ানকে বেছে নিল ইরান। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সইদ জালিলিকে পরাস্ত করেছেন তিনি। শনিবার ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে পেজেশকিয়ান ১ কোটি ৭০ লক্ষ এবং জালিলি ১ কোটি ৩০ লক্ষ ভোট পেয়েছেন।
ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হত। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হলে প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে আগাম নির্বাচনের বিকল্প ছিল না। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট রইসির মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তিকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোখবর। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হননি। এ বারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট চার জন প্রার্থী। পার্লামেন্ট সদস্য পেজেশকিয়ান এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য জালিলির পাশাপাশি পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের ঘলিবাফ এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের আর এক সদস্য, কট্টরপন্থী নেতা মোস্তাফা পুরমহাম্মদি ছিলেন ভোটের লড়াইয়ে।
গত ২৮ জুন প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী গতকাল দ্বিতীয় দফার ভোট হয়। প্রথম দফার ভোটে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাসুদ পেজেশকিয়ান ও সাইদ জালিলি এই দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথম দফায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সংস্কারপন্থী পেজেশকিয়ান। আর ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন কট্টরপন্থী সাইদ জালিলি।
প্রথম দফার নির্বাচনে ইরানের ৬ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানে যত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম ভোটার উপস্থিতির ঘটনা।সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দ্বিতীয় দফায় ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল।
মাসুদ পেজেশকিয়ানের বয়স ৬৯ বছর। তিনি হৃদ্রোগবিষয়ক সার্জন। ইরানের পার্লামেন্টে ২০০৮ সাল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি। জয়ের খবরে সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন পেজেশকিয়ান ।
مردم عزیز ایران انتخابات تمام شد و این تازه آغاز همراهی ماست. مسیر دشوار پیش رو جز با همراهی، همدلی و اعتماد شما هموار نخواهد شد دستم را به سوی شما دراز میکنم و به شرافتم سوگند میخورم که در این راه تنهایتان نخواهم گذاشت. تنهایم نگذارید.
— Masoud Pezeshkian (@drpezeshkian) July 6, 2024
অন্যদিকে ৫৮ বছর বয়সী জালিলি পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানে অনড়। তিনি কট্টরপন্থী সমর্থকদের যথেষ্ট সমর্থন ধরে রেখেছেন। অন্য রক্ষণশীল নেতাদের কাছ থেকেও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।