what is the meaning of Barzakh in Islam

Barzakh: জানুন বারযাখ কাকে বলে? মৃত্যুর পর কতদিন চলে বারযাখ জীবন?

বারযাখ একটি আরবি শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ ‘বাধা’, ‘বিচ্ছেদ’ বা ‘বাধা’, পর্দা, বেড়া, ঢাকনা, আবরণ। বরজাখের জগত (আলাম-ই-বারজাখ ) মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মধ্যবর্তী একটি পর্যায়কে চিহ্নিত করে। ‘ বারযাখের জগত মানে যেখানে মানুষ মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পূর্ব পর্যন্ত অবস্থান করবে।যেহেতু সে জগতটি চলমান পৃথিবীর জগত হতে অন্তরালে রয়েছে বা আড়ালে আছে, সেহেতু তাকে বারযাখের জগত বা কবরের জগত বলা হয়।

আরবি অভিধান অনুসারে দু’টি বস্তুর মাঝের বস্তুকে ‘বারযাখ’ বলে। সুতরাং দুনিয়া ও আখেরাতের মাঝের জগত অর্থাৎ মৃত্যু হতে নিয়ে হাশরের ময়দানে উঠার পূর্ব পর্যন্ত জগতটিই হলো বারযাখ। রূহ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পর তা হয় শান্তিপ্রাপ্ত না হয় সাজাপ্রাপ্ত হবে। কখনো অল্প সময়ের জন্য সাজা দিয়ে তা শান্তিতে পরিণত করে দেওয়া হবে যদি সে পাপ হতে পবিত্র হয়ে যায়। কখনো রূহ শরীরের সাথে মিলিত হলে তখন শরীরের সাথে রূহেরও শান্তি বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। সুতরাং কবর হয় জান্নাতের বাগিচা না হয় জাহান্নামের গুহা। যে কেউ মারা যাওয়ার পর যদি শাস্তি বা শান্তির হকদার হয়, তবে সে তার পুরোপুরি অংশ পাবে, তাকে কবর দেওয়া হোক বা না হোক।

যে মৃত্যুবরণ করল সে বারযাখের জগতে প্রবেশ করল। ব্যাকরণবিদ ইমাম ফাররা বলেছেন : মরণের দিন হতে পুনরুত্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত বারযাখ। (লিসানুল আরব : খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৯০৮)। আল কুরআনে বারযাখ শব্দটি সর্বমোট তিনবার এসেছে।সূরা আল মুমিনুনের ১০০ নং আয়াতে। (খ) সূরা আর রাহমানের ২০ নং আয়াতে। এবং (গ) সূরা আল ফুরকানের ৫২ নং আয়াতে।
মোট কথা, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মধ্যবর্তী সময়টি হলো বারযাখ।

একবার ইমাম শাবীকে বলা হল, অমুকে মারা গেছে। তিনি বললেন, সে এখন দুনিয়াতেও নেই, আখিরাতেও নেই। সে এখন বারযাখের জগতে আছে। (তাসকিরাহ : পৃষ্ঠা ১৫৮)। হযরত বারা বিন আযিব (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : মুমিন বান্দার যখন মরণক্ষণ ঘনীভূত হয়ে যায়, ফিরিশতা তার নিকট সুগন্ধিতে সুরভিত হয়ে আগমন করে। মুমিনের রূহ কবজের জন্য তার পাশে বসে। আর দু’জন ফিরিশতা বেহেশ্ত হতে সুগন্ধিপাত্র নিয়ে তার কাছে উপস্থিত হয়। তারপর এই দুই ফিরিশতা রূহ নিয়ে জান্নাতে গমন করে। তাদের জন্য আরশের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তাদের জন্য আকাশের দরজাও খুলে দেয়া হয়।ফিরিশতামন্ডলী তার আগমনে আনন্দিত হয় আর বলে এ পবিত্র রূহটি কার, যার আগমনে আকাশের প্রবেশদ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয়েছে তখন তার সুন্দরতম নাম উল্লেখ করা হবে, যে নামে তাকে পৃথিবীতে নামকরণ করা হত। বলা হবে, এটা অমুক ব্যক্তির রূহ।

তারপর ঐ রূহ নিয়ে যখন ফিরিশতারা ঊর্ধ্বে আরোহণ করতে থাকে, তখন আল্লাহপাক বলেন, আমার বান্দার আত্মাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে নাও। কেননা, আমি তাদের মর্তে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছি। যখন মুমিনকে পুনরায় কবরে ফেরত দেওয়া হয়, তখন কবরের মাটি তাকে বলে তুমি আমার পৃষ্ঠে থাকতে আমার নিকট প্রিয় ছিলে। সুতরাং তুমি দেখতে পাবে আমি তোমার সাথে কেমন আচরণ করি। তারপর তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত কবর প্রশস্ত হয়ে জান্নাতের দিকে একটি দরজা খোলা হবে। তাকে বলা হবে তুমি দেখো, আল্লাহতায়ালা তোমার জন্য কী পারিতোষিক তৈরি করে রেখেছেন। আর মাথার দিক থেকে দোযখের দিকে একটি দরজা খোলা হবে, আর বলা হবে তুমি দেখ, আল্লাহতায়ালা তোমার থেকে কেমন শাস্তি ও আযাব দূর করে দিয়েছেন।