দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে অনুদান আরও বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬০ হাজার থেকে অনুদান একলাফে বেড়ে হল ৮৫ হাজার টাকা। আগামী বছর এই অনুদান বেড়ে হতে পারে ১ লক্ষ টাকা। এদিন তেমনই প্রতিশ্রুতি দিলেন মমতা। শুধু অনুদান বৃদ্ধি নয়, বাড়ল বিদ্যুতের ছাড়ও।
মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিকাল ৪টে থেকে পুজোর কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে পুজো নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন। ঘোষণা করলেন অনুদান বৃদ্ধির কথা। পুজোকর্তাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন. “গতবার কত পেয়েছিলেন?” উত্তর দেওয়ার পর তিনি মজার ছলে বলেন, “এবার তাহলে কমিয়ে ৬০ হাজার করে দি!” পালটা পুজোকর্তারা বলে ওঠেন, ১ লক্ষ টাকা অনুদানের কথা। উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একলাফে এক লক্ষ হয় না। একটা স্ল্যাব আছে তো। এবার ৮৫ হাজার টাকা দিচ্ছি।” একইসঙ্গে পরের বছর অনুদান ১ লক্ষ টাকা করার ইঙ্গিত দেন। শুধু অনুদান বৃদ্ধি নয়। পুজোয় বিদ্যুতের বিলে ছাড় বেড়ে ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ফায়ার লাইসেন্স-সহ অন্যান্য সরকারি অনুমতিও মিলবে বিনামূল্যে।
পুজোয় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা যাতে কোনও ভাবেই না ঘটে, তা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা-সহ জেলার পুজোগুলিতে বিভিন্ন রকম থিম থাকে। এই থিমের জন্য কারও যাতে সমস্যা না হয়, সে দিকেও নজর রাখার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে নাম না করে তিনি শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পুজোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমির পুজোয় দু’বছর আগে লেজ়ার আলোর কারণে সে বার বিমানের উড়ানে সমস্যা দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কাগজে দেখলাম ১১২ ফুটের দুর্গা। ভাবতে পারেন! যে কেউ পদপিষ্ট হয়ে যেতে পারেন। এই নয়, আমি একটা চমক দিয়ে লাইটিং, লেজ়ারের খেলা করলাম। বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারে। অন্য মানুষের ক্ষতি হতে পারে।’’
পুজোমণ্ডপগুলিতে কড়া নজরদারি রাখার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ড্রোন, সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নজরদারি চালাতে হবে। লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকায় চড়া নিয়েও সতর্ক করেছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, মণ্ডপে প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য একটা গেট হলে চলবে না। মণ্ডপে আসা মহিলাদের নিরাপত্তা, প্রবীণদের সুবিধার দিকটিও পুজো কমিটিগুলিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি। মমতা এ-ও জানিয়েছেন, তিনি পুজোমণ্ডপে প্রবেশের জন্য ‘ভিআইপি কার্ড’-এর পক্ষে নন।
মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তাঁকে উদ্দেশ্য করে মমতা জানিয়েছে, পুজোর সময়ে কেউ অসুস্থ হলে যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, তা দেখতে হবে। এই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। কন্ট্রোল রুম খোলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।