রাজধানী দিল্লিতে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জলে ডুবে মৃত্যু হল তিন আইএএস পড়ুয়ার!। এদের মধ্যে দু’জন ছাত্রী এবং একজন ছাত্র। সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা।
পশ্চিম দিল্লির রাজেন্দ্র নগরে ‘রাও’স আইএএস স্টাডি সার্কল কোচিং সেন্টার’। সেখানে বহু পড়ুয়া প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। বেসমেন্টে রয়েছে কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরি। শনিবার বিকেল থেকেই মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। সন্ধ্যা তখন ৬টা। একটু একটু করে রাস্তার জল জমতে শুরু করে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই সেই জলস্তর বেড়ে যায়। রাস্তা ছাড়িয়ে সেই জল ঢুকতে শুরু করেছিল দিল্লির রাজেন্দ্র নগরের সেই কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে। ওই বেসমেন্টেই রয়েছে কোচিং সেন্টারের গ্রন্থাগার। বেশ বড়সড়। ১৫০ জন বসার মতো জায়গা রয়েছে সেখানে। কিন্তু শনিবার সেখানে ছিলেন ৩০-৩৫ জন আইএএস পড়ুয়া।
দমকল সূত্রে খবর, সন্ধে সাতটা নাগাদ তাঁরা খবর পান, কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকতে শুরু করেছে। সেখানে কয়েকজন পড়ুয়া আটকে পড়েছেন। তড়িঘড়ি শুরু হয় উদ্ধারকাজ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। কিন্তু জলে আসবাবপত্র ভাসতে থাকায় সমস্যা আরও বাড়ে। দড়ি দিয়ে টেনে কিছু পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু এই তিনজনকে উদ্ধার করা যায়নি। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই দিল্লির দমকল দফতরের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েছিল ওই কোচিং সেন্টার। সেই সংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, কোচিং সেন্টারটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বেসমেন্ট আবাসনের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। সেই নিয়মের খাতায় যা রয়েছে, তা-ও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। নথি অনুযায়ী, বেসমেন্টে উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা রাখতে হবে। যদি কোনও কারণে বেসমেন্ট ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতে হয়, তবে রাখতে হবে ঢোকার এবং বেরোনোর জন্য একাধিক দরজা। কিন্তু রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারে ঢোকার এবং বেরোনোর জন্য একটি মাত্র দরজা ছিল বলে অভিযোগ। বেসমেন্টে লাইব্রেরি তৈরি করেছিলেন কোচিং কর্তৃপক্ষ। নিয়মিত সেখানে পড়তে যেতেন ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া একটি শ্রেণিকক্ষও ছিল, যেখানে মাঝেমাঝে ক্লাস নেওয়া হত। বেসমেন্টে এর মাঝেই ছিল গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
দুর্ঘটনায় সেন্টারের মালিক ও কোঅর্ডিনেটরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, তিন পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই দুর্ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। একে ‘সিস্টেমের যৌথ ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করে তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেক নাগরিকের সুরক্ষা সরকারের দায়ভার।