Bangladesh: Sheikh Hasina's Resignation: Key Reasons Behind Her Departure from Power

Bangladesh: ‘রাজাকার’ মন্তব্যেই আগুনে ঘি! কেন দেশ ছেড়ে পালাতে হল শেখ হাসিনাকে?

১৯৭৫ সালে ১৫ অগস্ট নিহত হন বাংলাদেশের স্থপতি তথা হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। সেই কারণে অগস্ট মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ। ১৯৭৫-এর ১৫ অগাস্ট সেনা অভ্যুত্থানে বাবা মায়ের সঙ্গে নিহত হয়েছিলেন তাঁদের বড় ছেলে তথা হাসিনার ভাই শেখ কামাল। সোমবার সেই কামালের ৭৫ তম জন্মদিন। আর ওই দিনেই বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে হল শেখ হাসিনাকে।

পাঁচবার বাংলাদেশের কুর্সিতে বসেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবথেকে দীর্ঘ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাশালী মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানও তিনি। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার তাঁর বাংলাদেশের মসনদে বসা। এরপর ২০০৮ সালে তিনি ফের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তাঁর শাসনকালে ‘ব্লগার স্বাধীনতার অভাব’ নিয়ে বিক্ষোভের ঢেউ উঠেছিল। কিন্তু, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের কথায়, ‘পুরো পরিস্থিতিই নিপুণহাতে সামাল দিয়ে এসেছেন তিনি।’ তবে কোটা আন্দোলন কেন এই বিষম রূপ নিল? তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।

কোটা আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে বিক্ষোভের সুর ছিল। গত ১৪ জুলাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে?’ তাঁর এই মন্তব্যের পর জ্বলে ওঠেন বাংলাদেশের পড়য়ারা। যদিও পরে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘পড়ুয়াদের রাজাকার বলিনি, মন্তব্য বিকৃত হয়েছে।’ কিন্তু, তার আগেই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছিল বাংলাদেশের সর্বত্র। আর সেই বিক্ষোভ তিনি দমন করা শুরু করেন পুলিশের যথেচ্ছ গুলি-বন্দুক ব্যবহার করে।

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে রায় দিয়েছিল। কিন্তু, তারপরেও এরপর আরও নয় দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলে। এই দাবিগুলির মধ্যে ছিল ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, তাদের উপর থেকে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া, কোটা আন্দোলনে হত্যাকারীদের শাস্তি।  কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ ‘হামলা’য় একের পর এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় তারা।

‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘিরে যে অশান্তির সূত্রপাত হয়, তাতে কেবল রবিবারেই অন্তত ৯৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ১৪ জন পুলিশকর্মীও। হামলা, পাল্টা হামলায় জখম হন শতাধিক মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাসকদল আওয়ামী লীগের কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান আন্দোলনকারীরা।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় রটে গিয়েছিল হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। তখন বাংলাদেশ সরকার ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ওই খবরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। ঢাকায় হাসিনা ও বলেছিলেন আমি শেখ মুজিবুরের কন্যা আমি দেশ ছাড়ার পাত্রী নই। কিন্তু বিগত কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেল। শেষমেশ তিনি সোমবার পদত্যাগ করেন ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।